
নারায়ণগঞ্জ: জনসমক্ষে লাঞ্ছিতের ঘটনার বিচার দাবি করেছেন নারায়ণগঞ্জের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত। লাঞ্ছিতের ঘটনায় গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির কাছে সোমবার তিনি এ দাবি জানান।
জেলা প্রশাসনের সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা হতে দুপুর ১টা ১০ মিনিট পর্যন্ত প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত বন্দর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী হাবিবসহ তিন সদস্যের এক দলের কাছে তার দাবি তুলে ধরে বক্তব্য দেন। এদিন বিকেল ৫টা পর্যন্ত আরো কয়েকজনের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়। সার্কিট হাউজ থেকে বের হওয়ার পর তাকে কড়া পুলিশ প্রহরায় বের করা হয়। এর আগে সকালেও কঠোর প্রহরায় তিনি সার্কিট হাউজে যান।
সোমবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে সার্কিট হাউজে আসেন ঢাকা সিএমএম আদালতের চিফ ম্যাজিস্ট্রেট হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে ঢাকা মহানগর আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট মাজহারুল ইসলাম ও গোলাম নবী। এদিকে সাড়ে ১০টায় ঢুকে দুপুর ১টা ১০ মিনিটে বেরিয়ে যান শ্যামল কান্তি ভক্ত।
তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, “আমাকে যে অপমান করা হয়, যা আপনারা দেখেছেন, সে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার আমি চাই। আমার সঙ্গে অঘটন যে ঘটিয়েছে, অভিযুক্তকারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক। ধর্ম নিয়ে কটূক্তির প্রশ্নই ওঠে না, এটি অতিরঞ্জিত কথা। এটি পলিটিক্যাল ট্রিক্সও হতে পারে বা পলিটিক্যাল পর্যায়ে চলে যেতে পারে। এছাড়া আমাকে স্কুল থেকে কেন অব্যাহতি দেয়া হয়েছে, এ প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়েছে। আমাকে অন্যায়ভাবে অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হয়।”
সার্কিট হাউজে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছেন অভিযোগ তুলে শিক্ষক শ্যামলের বিচার ও শাস্তির দাবিতে ব্যানার ফেস্টুন লাগিয়ে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের অনুসারীরা স্কুলে অবস্থান করে। এসময় সিটি কর্পোরেশনের কয়েকজন কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। যাদের সচরাচর সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেখা যায়।
এর আগে একই দল সোমবার সকাল ১১টা হতে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ঘটনাস্থল বন্দরের পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ে যে ছাত্রকে নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত, সেই রিফাত হাসানসহ ১৯ জনের বক্তব্য নেয়। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত আরো কয়েকজনের বক্তব্য নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে ১৩ মে পিয়ার সাত্তার লতিফ স্কুলে প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে কানে ধরে ওঠবস করান নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। এ ঘটনায় ৭ আগস্ট আদালত এক আদেশে তদন্ত করতে ঢাকা সিএমএম আদালতের এক বিচারককে নির্দেশ দেন।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা: আবু তাহের