
ঢাকা: যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না বলে মন্তব্য করেছে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘যারা হত্যার ষড়যন্ত্র করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। তাদের মুখে স্বাধীনতার কথা মানায় না। তারা কিভাবে স্বাধীনতার কথা বলে? তারা তো দেশের স্বাধীনতায় চায়নি। যারা মিথ্যার জন্ম দেয় তারা কিভাবে শান্তির কথা বলে। তাদের মুখে শান্তির কথাও মানায় না।’
শনিবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনিস্টিটিউট মিলনায়তনে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ‘ক্ষমতা দখলকারীরা কিভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী হয়। যারা জঙ্গিবাদ সমর্থন করেন তারা কিভাবে শান্তির কথা বলে। শান্তির কথা তাদের মুখে মানায় না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশের ইতিহাস যেভাবে বিকৃত করা হয়েছে। মিথ্যা বলা, দেশের সঠিক ইতিহাস বিকৃত করা ওদের অভ্যাস। ওরা তো বলবেই। কিন্তু ইতিহাস বিকৃত এ দেশের মানুষকে আর গেলাতে পারবে না। কারণ, দেশের মানুষ, যুব সমাজ এখন সঠিক তথ্য জানার সুযোগ পেয়েছে। দেশের মানুষ আজ সঠিক ইতিহাস জানতে পারছে।বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জাতির সামনে দেশের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরেছে।’
খালেদা জিয়াকে উদ্যেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা তো আমেরিকার কাছে গ্যাস বিক্রির চুক্তি করে ক্ষমতায় এসেছিলেন। তবে আল্লাহ জন বুঝে ধন দেন। আমি জানতাম, তারা গ্যাস পাবে না তো, দেবে কী! আয়নায় নিজেদের বিগত দিনের চেহারা দেখুন, তবে আয়না শুধু সাজুগুজু করার জন্যই নয়।’
বঙ্গবন্ধুর অর্জনের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলার মানুষকে মুক্তি দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের আগে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর থেকে বঙ্গবন্ধু যে নির্দেশনা দিতেন, প্রতিটি বাঙালি সেটি মেনে চলতেন। তার কথা দেশের মানুষ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে দেশ স্বাধীন হয়। আওয়ামী লীগ মাত্র নয় মাসে দেশের সংবিধান দিয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলেছে- এসবই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য সম্ভব হয়েছে। ৭ মার্চ ভাষণে বঙ্গবন্ধু সব নির্দেশনা দিয়েছেন। জাতীয় সঙ্গীত, পতাকা কি হবে সেই নির্দেশনাও বঙ্গবন্ধু দিয়ে যান। স্বাধীনতার সকল প্রস্তুতি বঙ্গবন্ধ সম্পন্ন করেন।’
আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সমুদ্রসীমা জয় করেছে, শহীদ স্মৃতিসৌধ তৈরি করেছে। বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়ে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের মানুষ অনেক কিছু পায়। অন্যরা হত্যাণ্ডের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করে দুর্নীতি, লুটপাট করে। আমরা দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি, গণতন্ত্র অব্যাহত রাখবো। গণতান্ত্রের এই ধারা অব্যাহত থাকলে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়িত হবে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে মনের টানে জনগণের জন্যে কাজ করে। কারণ জনগণের জন্যই তো এই দেশ।’
ক্ষমতার পালাবদলে মার্কিন ভূমিকার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার এ দেশে আসেন প্রতিনিধি হয়ে। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ছিলেন লতিফুর রহমান। তার বাড়িতে আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি এবং বিএনপির প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারিকে দাওয়াত দেয়া হয়। সেখানে আমি ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান এবং বিএনপির খালেদা জিয়া ও মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়া যাই। সেখানে আমাদের লাঞ্চের আয়োজন হয় এবং সেখানে এই কথা আলোচনা হয়। আমি স্পষ্টভাবে বলে আসি, আমি দেশের মানুষের সম্পদ ক্ষমতার লোভে বিক্রি করব, সেই বাবার মেয়ে আমি না। আমি চলে আসি।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কিন্তু খালেদা জিয়া থেকে যান। জিমি কার্টার খুশি হন। সেখানে বসে তাদের চুক্তি হয়। ছবি আছে, পত্রিকায় এসেছিল। তথন অনেক প্রত্রিকায় নিউজ হয়েছে।আমি কোনো মিথ্যা বানানো কথা বলছি না।’
প্রতিবেদক: আশিক, সম্পাদনা: জাহিদ