
হাসান তামিম, ভিয়েনা অস্ট্রিয়া ,
অস্ট্রিয়াতে করোনাভাইরাসের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে দীর্ঘদিন ধরেই ট্রাফিক লাইট ব্যবস্থা চালু হওয়ার কথা শোনা যাচ্ছিল। শুক্রবার থেকে এই করোনাভাইরাস ট্রাফিক লাইট ব্যবস্থা চালু করেছে অস্ট্রিয়ার সরকার। এ ব্যাবস্থার মাধ্যমে অস্ট্রিয়ার বিভিন্ন শহর এবং জেলার করোনাভাইরাসের ঝুকির বিষয়ে ধারনা পাওয়া যাবে। এই ট্রাফিক লাইট ব্যবস্থা মোট চারটি রঙ রাখা হয়েছে যথাক্রমে সবুজ,হলুদ, কমলা এবং লাল । এই চারটি রঙ বিশিষ্ট ট্রাফিক লাইট ব্যবস্থার উপর নির্ভর করবে অস্ট্রিয়ার বিভিন্ন শহরের করোনাভাইরসের বিরুদ্ধে কি ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, জনসাধারনের উপর কেমন নীতিমালা গৃহীত হবে এবং কিভাবে মোকাবেলা করা হবে করোনাভাইরাসের সংক্রমন।
প্রতি সপ্তাহে এই ট্রাফিক লাইট ব্যবস্থা হালনাগাদ করা হবে ।
সবুজ ট্রাফিক লাইট সম্বলিত অঞ্চল করোনাভাইরাস সবচেয়ে কম ঝুকিপূর্ন এলাকা হিসেবে বিবেচিত হবে তবে এ অঞ্চলের আওতাভুক্ত জনগনকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। ইনডোরে বড় অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ পাচ হাজার অতিথি অংশগ্রহন করতে পারবে এবং মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক । খোলা মাঠে বড় অনুষ্ঠানে একসাথে দশ হাজার দর্শনার্থী অংশগ্রহন করতে পারবে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব না হলে মাস্ক পরিধান করতে হবে।

হলুদ ট্রাফিক অঞ্চল মাঝারি ঝুকিপূর্ন। এই অঞ্চলে শপিং মল সুপার শপে মাস্ক পরিধান এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি রেষ্টুরেন্টের প্রবেশ করতে হলে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করে প্রবেশ করতে হবে। এদিকে সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে কিছুটা নিয়মনীতি এবং জনসমাগম সীমিত করা হবে । হলরুমে দুই হাজার পাচশত জনের অধিক বক্তি অংশগ্রহন করতে পারবে না এবং খোলা মাঠে একসাথে পাচ হাজারের বেশি ব্যক্তি অংশগ্রহন করতে পারবে না । তবে মাস্ক এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা বাধ্যতামূলক ।
কমলা রঙ সম্বলিত অঞ্চল করোনাভাইরাসে অধিক ঝুকিপূর্ন। এই অঞ্চলে সামাজিক অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে হলরুমে সর্বোচ্চ ২৫০ জন এবং খোলা মাঠে ৫০০ জন অংশগ্রহন করতে পারবেন। হাসপাতাল এবং প্রবীন নিবাসে বহিরাগতদের প্রবেশের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা গ্রহণ করা হবে । বহিরাগত রোগিদের ক্ষেত্রে টেলিফোনে চিকিৎসা প্রদান করা হবে ।
সর্বশেষ লাল রঙ বেষ্টিত অঞ্চলে সচেয়ে বেশি ঝুকিপুর্ন এলাকা হিসেবে বিবেচিত হবে। এই অঞ্চলে বিয়ে এবং শেষকৃত্য অনুষ্ঠান ছাড়া সকল প্রকার অনুষ্ঠান নিষিদ্ধ। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রীর দোকান ছাড়া সকল ব্যাবসায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হবে । তবে ডেলিভারি সেবা চালু থাকবে । হাসপাতাল এবং প্রবীন নিবাসে দর্শনার্থীদের আগমন নিষিদ্ধ করা হবে । সেই সাথে সকল প্রকার ফিটনেস সেন্টার বন্ধ রাখা হবে।
উল্লেখ্য অস্ট্রিয়াতে করোনাভাইরাসের সংক্রমন পুনরায় বৃদ্ধি পেয়েছে এবং সংক্রমিত রোগীর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে । তবে শুক্রবারে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কম । তবে অস্ট্রিয়ার সরকার করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছে তার মধ্যে এই করোনাভাইরাস ট্রাফিক লাইট ব্যবস্থা অন্যতম ।