
বোগোতা: ৫০ বছরের গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে কলম্বিয়া সরকার এবং দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী ফার্ক এর মধ্যে করা অস্ত্রবিরতি চুক্তির ফলে আনন্দে ভাসছে কলম্বিয়ার আপামর জনতা।
গত বৃহস্পতিবার কিউবায় একটি অনুষ্ঠানে চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার পর কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট হুয়ান সান্তোষ ম্যানুয়েল এবং ফার্ক নেতা টিমোলিয়ন জিমেনেজ পরস্পরের সঙ্গে করমর্দন করেন।
রাজধানী বোগোতার কেন্দ্রস্থলে শতাধিক মানুষ বড়পর্দায় এই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন। অস্ত্রবিরতি চুক্তির ঘোষণা দেয়ার পর হাজার হাজার মানুষ জাতীয় পতাকা হাতে রাস্তায় নেমে আসেন। তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরেন। অনেকেই জাতীয় সঙ্গীত গাইতে শুরু করেন।
এই অস্ত্রবিরতি চুক্তিকে পূর্ণাঙ্গ শান্তি চুক্তির শেষ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যেই সম্পূর্ণ শান্তি চুক্তি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এর আগে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট জানিয়েছিলেন, তিনি আশা করছেন জুলাইয়ের শেষদিকে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে।
ল্যাটিন আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ায় দীর্ঘসময় ধরে চলা এই বিদ্রোহের ফলে ইতিমধ্যেই ২ লাখ ২০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
ফার্ক নেতা রড্রিগো লন্ডনো বলেন, আজকের দিনটা যুদ্ধের শেষ দিন হতে পারে।
প্রেসিডেন্ট ম্যানুয়েল দিনটিকে ঐতিহাসিক দিন হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আমরা ৫০ বছর ধরে চলা মৃত্যু, হামলা এবং বেদনার শেষপ্রান্তে এসে পৌঁছেছি। ফার্কের সঙ্গে আজকে থেকেই সশস্ত্র যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটল।
অনুষ্ঠানে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন এবং ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অস্ত্রবিরিতি চুক্তি হলেও শান্তিচুক্তি কিভাবে বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে উভয় পক্ষকেই কাজ করতে হবে।
এদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদেশি প্রতিনিধি ফেদেরিকো মোগেরিনি এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি এই চুক্তিকে স্বাগত জানান।
দ্য রেভুলেশনারি আর্মড ফোর্সেস অব কলম্বিয়া(ফার্ক) কলম্বিয়ার বৃহত্তম বিদ্রোহী গোষ্ঠী। বিগত অর্ধ শতাব্দী ধরে এই গোষ্ঠীর হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল কলম্বিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী। তারা দেশটির পুলিশ স্টেশন, সামরিক পোস্টে প্রায়ই সশস্ত্র হামলা চালাতো। সূত্র: বিবিসি
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/এফকে/জাই