
ডেস্কঃ অ্যাডাম লিন্ডসে গর্ডন; অস্ট্রেলিয়ান সাহিত্যের এক চিরদ্যুতিময় নক্ষত্রের নাম। তিনি ছিলেন একাধারে কবি, ঘোড়সওয়ার, রাজনৈতিক কর্মী এবং পুলিশ কর্মকর্তা। ১৮৩৩ সালের ১৯ অক্টোবর বাবা অ্যাডাম ডার্নফোর্ড গর্ডন ও মা হারিয়েট গর্ডনের পরিবারে জন্ম নেন তিনি। ডার্নফোর্ড গর্ডন ছিলেন বেঙ্গল রিসালার ক্যাপ্টেন, মা পারিবারিক সূত্রে অঢেল সম্পত্তির মালিক। সেজন্য শৈশব থেকেই ঘোড়ার পিঠে চড়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে আর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পারিবারের আর্থিক সহায়তা ছিল গর্ডন জুনিয়রের।
ব্যক্তিগত জীবনে গর্ডন সুদর্শন ও সুঠাম দেহের অধিকারী হওয়া সত্যেও ছিলেন লাজুক ও স্পর্শকাতর প্রকৃতির। কর্মসূত্রে ইংল্যান্ড ছাড়ার আগের দিন প্রথম প্রেমিকার কাছে ভালোবাসা নিবেদন করেছিলেন, যা মুখ ফুটে বলার সময়-সুযোগ করে উঠতে পারেননি তার আগে।
মায়ের প্রবল ইচ্ছা ও আর্থিক ক্ষমতায় শিক্ষা জীবন নিয়ে কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি গর্ডনকে। সাহিত্য রচনার শুরু সে শিক্ষা জীবন থেকেই। ‘এ সং অফ অটাম’, ‘দি সিক স্টকরাইডার’, ‘দি সুইমার’ কবির উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ।
তার রচিত ‘বুশ ব্যালেস এন্ড গ্যালোপিং রাইমস’ প্রকাশের পর পাঠক সমাদৃত না হলেও অস্ট্রেলিয় সাহিত্যের ইতিহাসে এর মত প্রাধাণ্য খুব কম সাহিত্যকর্মই পেয়েছে। কাব্যগ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ২৩ জুন, ১৮৭০ সালে। এর পরদিন, ২৪ জুন সকালে, কবি ব্রাইটন সৈকতে নিজের রাইফেলের গুলিতে কেড়ে আপন জীবন।
কবির এই আত্মহননের পেছনের কারন হিসেবে রয়েছে নানা মুনির নানা মত। মাত্র ১১ মাস বয়সী কন্যার মৃত্যু, ঘোড়দৌড়ের সময় পাওয়া মাথার আঘাত, প্রচুর মদ্যপান, সাহিত্য রচনায় অক্ষমতা, আর্থিক অনটন, দাম্পত্য কলহ; যে কারনেই হোক না কেন, আত্মহননের মাধ্যমে পৃথিবীকে অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত করেছেন কবি, বঞ্চিত হয়েছেন নিজেও। তারপরও আবেগী পাঠক সমাজের কামনা, কবি গর্ডনের আত্মাসহ সকল অত্যাচারিত আত্মার মুক্তি মিলুক।
নিউজনেক্সটবিডিডটকম/এসকেএস/টিএস