
ঢাকা: তথ্য প্রযুক্তি (আইসিটি) আইন অনুযায়ী দায়ের করা যে কোনো মামলায় পুলিশি প্রতিবেদন দেয়ার আগে আসামির জামিন আবেদনের শুনানি ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যনাল গ্রহণ করতে পারবে না বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে, পুলিশের প্রতিবেদন (চার্জশিট) দেয়ার আগেই এক আসামির জামিনের আবেদন শুনানির এখতিয়ার না থাকার পারও তা গ্রহণ করায় ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও অন্যদিকে শুনানির ক্ষমতা থাকার পরও তা গ্রহণ না করার কারণে মাগুরার জেলা ও দায়রা জজকে সর্তক করে দিয়েছেন আদালত।
এই আদেশের কপি দেশের সকল দায়রাজজ আদালত ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া তথ্য প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলার এক আসামি আহমেদ সবুজকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক জামিন আবেদন শুনানিতে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো: মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি এ এন এম বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিথ বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট আমিমুল এহসান জোবায়ের। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জমান কবির।
এর আগে ২২ মার্চ তথ্য প্রযুক্তি আইনের এক মামলায় আসামির জামিনের আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করা এবং না করার প্রশ্নে হাইকোর্টে লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করেন ঢাকা সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও মাগুরার জেলা ও দায়রা জজ।
গত ১৩ মার্চ তথ্য প্রযুক্তি আইনের মামলার এক আসামির জামিন আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করা না করার প্রশ্নে দুই বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা তলব করেন হাইকোর্ট। ওই আদেশ মোতাবেক ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সাইফুল ইসলাম এবং মাগুরার জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান হাইকোর্টে নিজ নিজ লিখিত ব্যাখ্যা দাখিল করেন।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ফেসবুকে সরকার বিরোধী পোস্টকে কেন্দ্র করে ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মাগুরা জেলার মোহাম্মপুর থানার আহমেদ সবুজ নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে তথ্য-প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
এই মামলায় মাগুরার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন আবেদন করলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন।
পরে মাগুরার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করেন আহমেদ সবুজ। কিন্তু দায়রা জজ আদালত একই বছরের ১৭ নভেম্বর এই মামলা শুনানিতে অস্কীকৃতি জানান।
এরপর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে জামিন আবেদন করলে ২০১৭ সালের ২৬ জানুয়ারি সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জামিন না মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
এই আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আহমেদ সবুজের আইনজীবী। হাইকোর্ট আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করে উপরোক্ত আদেশ দেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবির বলেন, আইনুযায়ী যেকোনো মামলার বিচার আমলে নেয়ার আগ পর্যন্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের যেকোনো আদেশের বিরুদ্ধে দায়রা জজ আদালত শুনানি গ্রহণ করবেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দায়রা জজ ওই জামিন আবেদন শুনানিতে মৌখিক ভাবে অস্কীকৃতি জানান। অপরদিকে তথ্য প্রযুক্তি আইনের যেকোনো মামলা আমলে নেয়ার আগ পর্যন্ত সাইবার ট্রাইব্যুনাল শুনানি করতে পারেন না।কিন্তু এই মামলা আমলে নেয়ার আগেই সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শুনানি করেছেন। এ কারণেই দুই বিচারকের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে আদেশ দেয় হাইকোর্ট।
প্রতিবেদক: ফায়েজ, সম্পাদনা: জাহিদ