
ইয়াছিন রানা, ঢাকা: ‘আই লাভ হিন্দু, আই লাভ ইন্ডিয়া’ মাত্র ক’দিনে আগেই এমন কথা বলেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার এমন বক্তব্যের রেশ না কাটতেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয় লাভ করলেন তিনি।
ট্রাম্পের এ ধরণের মন্তব্যের কারণে দেশটি মুসলিম ও অবৈধ ইমিগ্রেন্টরা স্বাভাবিক ভাবেই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনকে সমর্থক করেছেন। এছাড়া বাংলাদেশের যারা আমেরিকায় থাকেন তার সিংহ ভাগই ছিলেন হিলারির পক্ষে। সেইসঙ্গে ট্রাম্পের বর্ণবাদী আচরণের কারণে কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকরাও ঝুঁকছিলেন হিলারির দিকে। এখন ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর দেশটি মুসলিমদের সঙ্গে আচরণের ধরন কেমন হবে তা নিয়ে বেশ চিন্তিত অনেকে।
কেননা শুধু ট্রাম্প নন, গোটা রিপাবলিকান দলটিই প্রকাশ্যে মুসলিম বিরোধী আচরণ করেছে সব সময়। ২০০০ সালে যখন জর্জ ডাব্লিউ বুশ ক্ষমতায় আসেন এর পর থেকে আফগানিস্তান, ইরাকে সরাসরি হামলা চালায় আমেরিকা। তার সময় থেকেই মার্কিন মুসলিমরা হেনস্তার শিকার হতে শুরু করেছে।
এরপর ২০০৮ সালে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী বারাক ওবামা ক্ষমতায় এসে সেই রীতিতে আক্রমণাত্মক না হয়ে সে রীতি জিইয়ে রেখেছেন। এখন ২০১৬ সালে আবারো সেই রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায়।
এখন স্বাভাবিক ভাবেই ট্রাম্প তার পূর্ববর্তী নেতা জর্জ বুশের পদক্ষেপে চলবেন। তাই আমেরিকার মুসলিমরাসহ অন্যান্য দেশের মুসলিমরাও চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। এছাড়া যেসব মুসলিমরা আমেরিকায় যেতে চান তারাও বেশ চিন্তিত।
এছাড়া নির্বাচনের আগে ‘অবৈধ ইমিগ্রেন্টদের আমেরিকা থেকে বের করে দেয়া হবে’ এমন বক্তব্যে নির্বাচনে ট্রাম্পের জয় লাভের পর এক দিন না যেতেই কানাডা যাওয়ার জন্য ইমিগ্রেন্টদের ওয়েবসাইট সার্চের কারণে কানাডার সেই ওয়েবসাইট ক্রাশ করেছে।
তবে অবৈধ ইমিগ্রেন্ট বা মুসলিমদের চিন্তার কোন কারণ নেই বলে মনে করেছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও কূটনীতিক সাবিহ উদ্দিন আহমেদ। নিউজনেক্সটবিডি ডটকম’কে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে অনেক কথাই বলা হয়ে থাকে, তবে এতে মুসলিমদের চিন্তার কোন কারণ নেই। আর সেই কথা তো তিনি হিন্দুদের একটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন।’
সাবেক এই রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এ বিষয়ে মুসলিমদের চিন্তার কোন কারণ নেই, কারণ ট্রাম্প নির্বাচনের আগে যে কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার পর কিন্তু তা বলেননি। তিনি সকল ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার কথা বলেছেন। এবং আরো বলেছেন তিনি সকল আমেরিকানদেরই প্রেসিডেন্ট।’
তিনি বলেন, ‘আমেরিকার রাজনীতি আর আমাদের দেশের মতো অবস্থা না যে ক্ষমতার পরিবর্তন হলে আমল পরবির্তন হবে। আর বিরোধীদের কোনঠাসা করা হবে। তাই সাধারণ ভাবে কারো কোন সমস্যা তৈরী হবার কারণ নেই।’
নারী কেলেঙ্কারি, মুসলিম বিদ্বেষী, অভিবাসী উচ্ছেদ, বর্ণবাদী আচরনের মতো বহু আলোচিত সমালোচিত ঘটনার পরও শেষ হাসি হাসলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলেন প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম।
সজিব ঘোষ