
ডেস্ক: অ্যাসিড-সন্ত্রাসের বিচার না হওয়া শিরোনামে প্রথম আলো তাদের সম্পাদকীয়তে লিখেছে, “অ্যাসিড-সন্ত্রাসের ঘটনায় প্রতি চারজন আসামির তিনজনই খালাস পেয়েছেন। অর্থাৎ চারজন আক্রান্ত নারীর তিনজনই বিচার পাননি। ২০০২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ১৪ বছরে এই হলো বিচারহীনতার পরিসংখ্যান। অথচ অ্যাসিড অপরাধ আইন, ২০০২ অনুযায়ী, এসব মামলার বিচারের কাজ ৯০ দিনের মধ্যেই শেষ করার বাধ্যবাধকতা ছিল। বিচারহীনতার ‘সুফল’ অ্যাসিড-সন্ত্রাসীরা ভালোভাবেই ভোগ করছেন।
এই ১৪ বছরে অ্যাসিড-সন্ত্রাসের মামলায় ১৪ জনের মৃত্যুদণ্ড হলেও কার্যকর হয়নি একটিও। এ সময়ে সারা দেশে মামলা হয়েছে ২ হাজার ৫৭টি। অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি দাবি করে পুলিশ অভিযোগপত্র দিয়েছে ৮২২টি মামলায়। মুলতবি রাখা হয়েছে ৪৬৯টি মামলা। সিংহভাগ মামলাই দুর্বল তদন্তের কারণে আসামিকে চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। অর্থাৎ ২ হাজার ৫৮টির মধ্যে ১ হাজার ৮৬৯টি অ্যাসিড-সন্ত্রাসের আসামি বিচারহীনতার কারণে স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ওপরে বলা মামলাগুলোতে মোট আসামির সংখ্যা ছিল পাঁচ হাজারেরও বেশি। গ্রেপ্তার হন মাত্র ১২ শতাংশ। বাকি ৮৮ শতাংশ থেকে যান ধরাছোঁয়ার বাইরে। এঁদের মধ্যে নিরপরাধও থাকতে পারেন। কিন্তু অধিকাংশকেই আইনের মুখোমুখি করতে না পারার ব্যর্থতা কীভাবে ঢাকবে পুলিশ বিভাগ? এভাবেই অপরাধ প্রশ্রয় পায়, আর অ্যাসিড-সন্ত্রাসের মতো বর্বর মর্মান্তিক ঘটনার শিকার ব্যক্তিরা করুণ পরিণতির ভার বহন করে চলতে থাকেন।”
বিদেশ থেকে আসা অর্থনৈতিক অনুদান নিয়ে বিদেশি অনুদানে যথেচ্ছাচার শিরোনামে কালের কণ্ঠ সম্পাদকীয়তে লিখেছে, “সারা দুনিয়ায় যেভাবে সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, তাতে কোনো দেশই নিজেদের সম্পূর্ণ নিরাপদ মনে করতে পারে না। বাংলাদেশও নয়। গুলশান হামলার মতো বড় ঘটনায় দেশের মানুষের শঙ্কা অনেক গুণে বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় জঙ্গিবাদ নির্মূল সরকারের সামনে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে এসেছে। আর সে ক্ষেত্রে সরকারের প্রধান করণীয় হচ্ছে জঙ্গি কর্মকাণ্ডে অর্থায়নের উৎস বন্ধ করা। অভিযোগ আছে, বিভিন্ন সময়ে কিছু বিদেশি ব্যক্তি বা সংস্থার কাছ থেকে কিছু এনজিও বা বেসরকারি সংস্থা বড় অঙ্কের অর্থ নিয়েছে এবং তারা সেই অর্থ জঙ্গি কর্মকাণ্ডে ব্যবহার করেছে। এমনই কয়েকটি দেশি ও বিদেশি এনজিওর কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধও করা হয়েছে। কিন্তু তারা থেমে থাকে না, বরং নতুন নতুন নামে তাদের পুরনো কাজ চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তাই দেশের নিরাপত্তার স্বার্থেই এনজিওগুলোর ষড়যন্ত্রমূলক তৎপরতা নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি হয়ে উঠেছে। আশার কথা, বিলম্বে হলেও আমাদের জাতীয় সংসদে গত বুধবার বৈদেশিক অনুদান (স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম) রেগুলেশন বিল ২০১৬ পাস হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বিলটির যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা গেলে এনজিওর নামে জঙ্গিবাদে অর্থায়নসহ রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর অনেক তৎপরতাই রোধ করা সম্ভব হবে।”
চিনি ও লবণের মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পদক্ষেপ নিক শিরোনামে বণিক বার্তা লিখেছে, “চিনি ও লবণের দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে, তা কারো জানা নেই। কেন এমন পরিস্থিতি, তারও যৌক্তিক কোনো ব্যাখ্যা মিলছে না। আন্তর্জাতিক বাজারে চিনির দাম কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হলেও দেশের বাজারে তাতে যেন আগুন লেগেছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ টাকা দরে। প্যাকেটের দাম তো আরো বেশি। চিনি ও সয়াবিন তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়তে শুরু করেছে, এ অজুহাতে রিফাইনারি কোম্পানিগুলো দেশের বাজারেও এ দুই পণ্যের দাম বাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে মসুর ডালের দাম কমলেও দেশের বাজারে তার প্রভাব পড়েনি; উল্টো বেড়েছে। আর অপরিশোধিত লবণের দাম বাড়ার অজুহাতে দেশের বাজারে এর দর কেজিপ্রতি বেড়ে ৩৫ টাকায় পৌঁছেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর এক্ষেত্রে কোনো ভূমিকাই রাখছে না। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কোনো চেষ্টাও নেই।”
ইত্তেফাক সম্পাদকীয়তে শিরোনাম ছিলো ট্রাফিক পুলিশের স্বাস্থ্যগত সমস্যা। পত্রিকাটি লিখেছে, “অপবাদ রহিয়াছে অঢেল, অথচ বিড়ম্বনার শেষ নাই ট্রাফিক পুলিশের। প্রাকৃতিক কিংবা মানবসৃষ্ট হউক—যেকোনো দুর্যোগের ভিতরেও অবিরতভাবে দায়িত্ব পালন করিয়া যাইতে হয় তাহাদের। ভোরের আলো ফুটিতেই বাঁশি হাতে রাস্তায় নামিতে হয়। অন্য আরেক দলের তখন সময় হয় ব্যারাকে ফিরিবার। রাস্তার শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করিতে গিয়া অনিয়মিত জীবনযাপনে নানা স্বাস্থ্য সমস্যায় জর্জরিত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের বড় একটি অংশ। এই রোগের ভোগান্তি আরো বাড়িয়া যায় অবসরোত্তর জীবনে।”
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা: পিএ