
ঢাকা: স্বাধীনতার পরে আজম খানকে বাংলাদেশের ব্যান্ড সঙ্গীতের বিকাশের পথিকৃৎ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পরবর্তী বেশ কয়েকটি প্রজন্মের শিল্পীদের উপর তার গভীর প্রভাব রয়েছে।
৮০’র দশকে যে তরুণ কাঁধ অব্দি চুল রেখে গিটার হাতে নিয়ে গানের স্বপ্ন দেখতো তার গানের স্বপ্নের বীজ বুনে দিয়েছিলো ‘উচ্চারণ’। নিজের গান যারা স্টেজে শুরু করতে পারেনি তারা প্রাণখুলে গেয়েছেন ‘ওরে সালেকা ওরে মালাকে’ ‘আলাল দুলাল’।
সঙ্গীতপিপাসু বাঙ্গালী জাতীর সবচেয়ে বড় অর্জন মুক্তিযুদ্ধে তিনি ছিলেন গেরিলা বাহিনীর সদস্য। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি ঢাকায় বেশ কয়েকটি গেরিলা অভিযানে অংশ নেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর গঠন করেন পপ ব্যান্ড ‘উচ্চারণ’। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে আজম খানের নতুন ঘরানার সঙ্গীত তরুণ প্রজন্মের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তাও পায়।
১৯৭৪-৭৫ সালে একটি গান বাংলাদেশের সঙ্গীতপ্রেমীদের, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের হৃদয় জয় করে নেয়, সেটি হচ্ছে আজম খানের গাওয়া গান ‘হায় রে বাংলাদেশ’। রেললাইনের পাশে বস্তিতে কোন এক ছেলের মৃত্যুতে তার মায়ের কান্না নাড়া দিয়েছিল আজম খানকে। তা থেকেই এই গানের জন্ম।
এখনও এদেশের কোনো না কোনো মঞ্চে কেউ না কেউ ‘হায় রে হায় বাংলাদেশে’ গেয়ে শো শুরু করেন নয়তো শেষ করেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়া এ শিল্পীর দেশের প্রতি ছিল অকৃত্রিম টান। আর সেই টানেই তিনি গান গেয়েছেন সাধারণ মানুষের জন্য, দেশের জন্য। তার গান ছড়িয়ে পড়েছে বাংলাদেশের প্রতিটি প্রান্তে। আর তৈরী হয়েছে তার কোটি-কোটি ভক্ত। আর ভক্তকুলের কারণে তার নামের সাথে যোগ হয় ‘পপগুরু’।
২০১১ সালের আজকের দিনে অর্থাৎ ৫ জুন সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ), ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন পপগুরু আজম খান। তার পুরো নাম ‘মোহাম্মদ মাহবুবুল হক খান’। সুখে থাকুন প্রিয় শিল্পী।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/এমআইআর/এসআই