
ঢাকা: দক্ষিণখানের আশকোনায় জঙ্গিবিরোধী ‘রিপল২৪’অভিযানে নিহত নারী জঙ্গির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। বিস্ফোরণেই ওই নারীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ।
রোববার দুপুরে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। সোহেল মাহমুদ বলেন, ‘আত্মঘাতী বোমার আঘাতে ওই নারীর পেট ও নিচের অংশ ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছি ওই বিস্ফোরণেই তার মৃত্যু হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ওই নারীর শরীর থেকে আমরা ১০টি স্প্লিন্টার ও বিস্ফোরিত বোমার অক্ষত অংশ উদ্ধার করেছি। তার পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য ডিএনএ টেস্ট করা হবে। সকল নমুনা সংগ্রহ করে মহাখালী পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতে সূর্যভিলা নামের ওই বাড়িটিতে জঙ্গি আস্তানার খোঁজ পায় পুলিশ। পরে রাত দুইটার দিকে বাড়িটি ঘিরে ফেলা হয়। জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
সকালে ওই বাসা থেকে রূপনগরে নিহত জঙ্গি জাহিদের স্ত্রী জেবুন্নাহার শিলা ও তার মেয়ে এবং জঙ্গি মুসার স্ত্রী তৃষা ও তার সন্তান আত্মসমর্পণ করে। কিন্তু ভেতরে রয়ে যান জঙ্গি সুমনের স্ত্রী, জঙ্গি ইকবালের সাত বছরের মেয়ে এবং তানভীর কাদেরীর ১৪ বছরের ছেলে আফিফ। তাদের কাছে আত্মঘাতী বা সুইসাইডাল ভেস্টসহ বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক আছে বলে জানতে পারে পুলিশ।
দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তাদের অসংখ্যবার আত্মসমর্পণের আহবান জানায় পুলিশ। কিন্তু তারা তাতে কর্ণপাত না করলে ভেতরে টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা হয়। এক পর্যায়ে দরজা খুলে ওই নারী জঙ্গি সাত বছরের মেয়েটিকে নিয়ে বের হয়। তারা পার্কিংয়ের দিকে এগিয়ে আসে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে আবারো আত্মসমর্পণ করতে বলেন। কিন্তু তিনি বাম হাতে শিশুটিকে এগিয়ে ধরে, ডান হাত উপরে তোলার ভঙ্গি করে হাত নামিয়ে কোমরে রাখা বিস্ফোরকে চাপ দেন। সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ওই নারী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয় পুলিশ।
তখনো জঙ্গি তানভীরের কিশোর ছেলে ভেতরেই অবস্থান করছিলো। সে আত্মসমর্পণ না করায় পুলিশ তাকে নিস্তেজ করতে গ্যাস ছোঁড়ে। একপর্যায়ে সে ভেতর থেকে গুলি করে ও গ্রেনেড ছোঁড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। এ সময় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়।
প্রতিবেদন: প্রীতম সাহা সুদীপ, সম্পাদনা: মাহতাব শফি