
ঢাকা: রাজধানীর বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন, গাবতলী ও শাহআলী মাজারের পেছনের একটি বাড়ি থেকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) যে ছয় জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে তারা আত্মঘাতী হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিলো। বুধবার দুপুরে র্যাব সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার মুফতি মাহমুদ খান এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে পাঁচ জন জেএমবির সক্রিয় সদস্য এবং আরেকজন আনসারুল্লাহ বাংলাটিমের সদস্য। তারা আত্মঘাতী হামলার জন্য পূর্ণ প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিলো। তাদের আমিরের নির্দেশনা অনুযায়ী যেকোনো স্থানে যেকোনো সময় নাশকতা ঘটানোর জন্য তারা অপেক্ষা করছিলো।’
মঙ্গলবার রাতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল বিমান বন্দর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে জাহিদ আনোয়ার ওরফে পরাগকে (২২) গ্রেফতার করে। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাত দুইটায় গাবতলীর আল-আরাফাত খাবার হোটেল থেকে মোঃ তাজুল ইসলাম ওরফে তাজুল (২৯), জাহিদ হাসান ওরফে মাঈনকে (২১) গ্রেফতার করে।
পরে বুধবার ভোর ৫টায় শাহআলী মাজারের পেছনের একটি ভাড়া বাসা (বাসা নং ১২, রোড-২, উত্তর বিসিল, ওয়াড-৮, ব্লক-খ, থানা-শাহআলী, মিরপুর-১) থেকে “আত্-তামকীন” জঙ্গি সাইটের এ্যাডমিন ইঞ্জিনিয়ার মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে সিফাত (২৭), মোঃ জিয়াবুল হক ওরফে জিয়া (২৪) এবং মোঃ নয়ন হোসেনকে (২১) গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ২টি পিস্তল, ২টি ম্যাগাজিন, ৭ রাউন্ড গুলি, ১৩টি ডেটোনেটর, ৩৪টি সার্কিট, ৪টি চাপাতি, ৫টি ছোট চাকু, ১টি করাত, ৯টি আইডি, ৫টি হ্যান্ড গ্রেনেড, ৬টি মোবাইল, ১২টি চকলেট বোম্ব, ১০০ গ্রাম বারুদ, ৪ গ্রাম পাওয়ার জেল, ৮ গ্রাম সাদা গান পাউডার, ৫ গ্রাম লাল গান পাউডার, ২টি মানি ব্যাগ, ১টি ড্রাইভিং লাইসেন্স, ১টি তমা ট্রেনিং স্কুল কার্ড, ৪টি ব্যাগ এবং নগদ ১ হাজার ৩৭ টাকা উদ্ধার করা হয়।
মুফতি মাহমুদ বলেন, সম্প্রতি জেএমবির দুটি গ্রুপ দাওলাতুল ইসলামের ব্যানারে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ ও শোলাকিয়ায় নাশকতা চালায়। সেখান থেকে যারা আটক হয়েছেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ ও ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত আলামত নিয়ে কাজ শুরু করে র্যাব। র্যাবের গোয়েন্দারা জানতে পারে যে, জেএমবি’র এরকম আরও বেশ কিছু গ্রুপ নাশকতার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছে এবং যেকোন স্থানে তারা নাশকতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম। এরই প্রেক্ষিতে র্যাব এই অভিযান চালায়।
তিনি আরো বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে তারা মূলত জেএমবি ও আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য। জেএমবির সদস্যরা নিজেদেরকে “দাওলাতুল ইসলাম বাংলাদেশ” এর সদস্য বলে দাবি করে। জানা গেছে দাওলাতুল ইসলাম বাংলাদেশ এর সদস্য কর্তৃক এখন পর্যন্ত ১১টি হামলা পরিচালিত হয়েছে। এর মধ্যে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ ও মাদারীপুরে শিক্ষকের উপর জঙ্গি হামলা অন্তর্ভুক্ত।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/পিএসএস/এমএস/ওয়াইএ