
চট্টগ্রাম: আনোয়ারা ডিএপি কারখানা থেকে এ্যামোনিয়া ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় একদিনে প্রায় ৩৬ লাখ মেট্রিক টন মাছ মরে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে মৎস্য অধিদফতর। অধিদফতরের কর্মকর্তারা বলছেন সেখানে ১১টি খামারের ১৯১ একরের পানি এ্যামেনিয়ার মিশ্রণে বিষাক্ত হয়ে গেছে।
সোমবার রাতে বিস্ফোরণে গ্যাস ছড়িয়ে পড়ার পর মঙ্গলবার সকাল থেকে ডিএপি কারখানার আশপাশের মৎস্য খামার ও জলাশয়গুলো মৃত মাছ ভেসে উঠতে দেখা যায়। এই ঘটনায় কি পরিমাণ মাছ মারা গেছে তার একটি প্রাথমিক হিসাব দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য অধিদফতর।
চট্টগ্রাম জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রভাতী দেব জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার আমাদের কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেছেন, তাতে মৎস্য সম্পদের একদিনের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পাওয়া গেছে।
‘প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী কারখানার আশপাশের ১১টি খামারে মাছ মরে গেছে,একদিনেই ৩৬ মেট্রিক টন মাছ মারা গেছে, এরমধ্যে ৭ মেট্রিক টন চিংড়ি এবং ২৯ টন অনান্য প্রজাতির, মরে যাওয়া মাছের মূল্য ১ কোটি ২০ লাখ টাকা হতে পারে, উল্লেখ করেন তিনি।
প্রভাতী দেব বলেন, ‘দ্বিতীয় দিনের মতো আজ( বুধবার) আমাদের টিম ঘটনাস্থলে গেছে, খামারের বাইরে ওই এলাকার জলাশয় এবং মানুষের বাড়ির পুকুরে মাছের কি অবস্থা সেটাও আমরা জানার চেষ্টা করবো।’
যেভাবে মাছ মরেছে তাতে বোঝা যাচ্ছে ১৯১ একরের ১১টি খামারের পানি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে, এসব পানিতে বিপদজ্জনকভাবে এ্যামেনিয়ার মিশ্রন ঘটেছে, এই পানি কি করা হবে সেটা নিয়েও সিদ্ধান্ত নিতে হবে, ব্যাপক হারে এ্যামোনিয়ার মিশ্রণের ফলে ক্ষার বৃদ্ধি পেয়ে এই পানি প্রায় অক্সিজেন শূন্য হয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে, উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘ব্যাপক হারে বৃষ্টি হলে খামারগুলোর পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাবে, অন্যথায় এই পানি সহসা মৎস্য চাষের উপযোগী হবে না।
এদিকে পরিবেশ অধিদফতরের কর্মকর্তারা ডিএপি কারখান আশপাশের খামারের পানি ও ওই এলাকার বাতাসের নমুনা সংগ্রহ করেছেন। এগুলোতে দুষণের মাত্রা নির্ণয় করে এই ব্যাপারে করনীয় নির্ধারণ করা হবে।
সোমবার রাতে ডিএপি কারখানার এক নং ইউনিটে বিস্ফোরণে প্রায় আড়াইশ টন এ্যামোনিয়া গ্যাস বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রতিবেদক- সালেহ নোমান, সম্পাদনা- জাহিদুল ইসলাম