
ঢাকা: বেতন বাড়ানোর কথা উঠলে সবাই বলে শ্রমিকদের বেতন অনেক বাড়ানো হয়েছে। আর বাড়ানো যাবে না। কিন্তু একবারও কি কেউ ভাবে না? আমাদের খাটুনি কতটা ? আমরা ভোর থেকে অর্ধরাত পর্যন্ত খাটি। বিনিময়ে হয়তো কিছু মোটা চাল আর মোটা কাপড় জোটে। কিন্তু তা যদি যায় ঘর ভাড়ায়, তবে আমরা খাব কি? আসলে আমরা কি মানুষ না? কেন আমাদের এতো কষ্ট ? কেন আমাদের সারাদিন খেটেও পেটের জ্বালা নিবারণে আন্দোলনের কথা ভাবতে হয় ? মাথা গোজার ঠায় পেতে রাজপথে নামতে হয়?
সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ভবনের সামনে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির মানববন্ধন ও সমাবেশ থেকে শ্রমিকরা এসব কথা বলেন । সমাবেশে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভা প্রধান তাসলিমা আখতার, সংগঠনের নেতা আমিনুল ইসলাম, মিনহাজুল হক, অঞ্জন দাস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভা প্রধান তাসলিমা আখতার বলেন, মালিকেরা লোভ ও লাভের পরিমাণ একটু কমালেই শ্রমিকেরা ভালো থাকবেন। তারা আসলে এই সামান্য টাকায় কেমন আছে, তা তাদের চেহারা দেখলেই বোঝা যায়। এটা যুক্তি তর্কের বিষয় নয়, বাস্তবিক অর্থে জীবন বাঁচানোর বিষয়। শ্রমিকদের দাবি যদি পূরণ না হয়, তবে ভয়ে হয়তো তারা আন্দোলন করবে না। কিন্তু তাদের মনের ভিতরের আন্দোলন ঠিকই চলবে। পেটের খুধা না মিটলে জোর করে কি আন্দোলন থামানো যায়? যায় না।
সমাবেশে শ্রমিক নেতারা বলেন, ন্যায্য আন্দোলনের মধ্যে চলছে শ্রমিক ছাঁটাই, গ্রেফতার। অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দেওয়া হোক এবং আমাদের বেতন কাঠামো তৈরির জন্য, তৈরি পোশাক শ্রমিকদের মজুরি ন্যূনতম ১৬ হাজার টাকা করার উদ্দেশ্যে মজুরি বোর্ড গঠন করা হোক। তারা আরও বলেন, আশুলিয়ার পোশাক শ্রমিকেরা পেটের দায়ে মজুরি বৃদ্ধি ও কারখানার ভেতরের নির্যাতনের প্রতিবাদে ন্যায্য আন্দোলন করেছেন। কারখানা খুলে দেওয়া হয়েছে বটে কিন্তু বিশাল সংখ্যক শ্রমিক ছাঁটাইয়ের ভেতরে পড়েছে। এখনও গ্রেফতারের ভীতির পরিবেশ বিরাজ করছে।
প্রতিবেদক: রিজাউল করিম, সম্পাদনা: ইয়াসিন