
ঢাকা: রাজধানীর আশকোনার জঙ্গি আস্তানায় ‘অপারেশন রিপল ২৪’ অভিযান শেষে নিহত এক জনের মরদেহ শনিবার উদ্ধার করা হলেও ঘরের ভেতরে থাকা আরেক জনের মরদেহ উদ্ধার করা হবে আজ রোববার। বেলা ১১টার দিকে বাড়িটিতে যাবে বোমা নিস্ক্রিয়কারী দল।
শনিবার অভিযান শেষে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, বাসাটির ভেতরে গ্যাস ও বিস্ফোরক রয়েছে। তাই এখনই ভেতর প্রবেশ করা যাচ্ছে না। রোববার সকাল থেকে ফের আমাদের বম্ব ডিসপোজাল টিম কাজ করবে। বিস্ফোরক নিষ্ক্রিয় করা হবে।
তিনি জানান, বাড়ির বাইরে পার্কিং গ্রাউন্ডে যে নারীর মরদেহ রয়েছে সেটি আইনি প্রক্রিয়া শেষে আজই ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হবে। কিন্তু ভেতরে যে কিশোরের লাশ রয়েছে সেটি রোববার সকালে সরানো হবে।
প্রসঙ্গত শুক্রবার রাতে সূর্যভিলা নামের ওই বাড়িটিতে জঙ্গি আস্তানার খোঁজ পায় পুলিশ। পরে রাত দুইটার দিকে বাড়িটি ঘিরে ফেলা হয়। জঙ্গিদের আত্মসমর্পনের আহ্বান জানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
সকালে ওই বাসা থেকে রূপনগরে নিহত জঙ্গি জাহিদের স্ত্রী জেবুন্নাহার শিলা ও তার মেয়ে এবং জঙ্গি মুসার স্ত্রী তৃষা ও তার সন্তান আত্মসমপর্ণ করে। কিন্তু ভেতরে রয়ে যান জঙ্গি সুমনের স্ত্রী, জঙ্গি ইকবালের সাত বছরের মেয়ে এবং তানভীর কাদেরীর ১৪ বছরের ছেলে আফিফ। তাদের কাছে আত্মঘাতী বা সুইসাইডাল ভেস্টসহ বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক আছে বলে জানতে পারে পুলিশ।
দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তাদের অসংখ্যবার আত্মসমর্পণের আহবান জানায় পুলিশ। কিন্তু তারা তাতে কর্ণপাত না করলে ভেতরে টিয়ারসেল নিক্ষেপ করা হয়। এক পর্যায়ে দরজা খুলে ওই নারী জঙ্গি সাত বছরের মেয়েটিকে নিয়ে বের হয়। তারা পার্কিংয়ের দিকে এগিয়ে আসে। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে আবারো আত্মসমর্পণ করতে বলেন। কিন্তু তিনি বাম হাতে শিশুটিকে এগিয়ে ধরে, ডান হাত উপরে তোলার ভঙ্গি করে হাত নামিয়ে কোমরে রাখা বিস্ফোরকে চাপ দেন। সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ওই নারী ঘটনাস্থলেই নিহত হন। শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয় পুলিশ।
তখনো জঙ্গি তানভীরের কিশোর ছেলে ভেতরেই অবস্থান করছিলো। সে আত্মসমর্পণ না করায় পুলিশ তাকে নিস্তেজ করতে গ্যাস ছোঁড়ে। একপর্যায়ে সে ভেতর থেকে গুলি করে ও গ্রেনেড ছোঁড়ে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোঁড়ে। এ সময় ওই কিশোরের মৃত্যু হয়।
গ্রন্থনা: ময়ূখ