
ঢাকা: গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার একমাস পূর্ণ হয়েছে সোমবার। এখনো ঘটনার মূল হোতাসহ জড়িতরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরেই রয়ে গেছেন। যদিও তদন্ত সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন ঘটনার মাস্টার মাইন্ডসহ সকলকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা গেছে। শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় আনা যাবে।
তদন্তে সংশ্লিষ্টরা জানান, গুলশান হামলায় জড়িতরা কোথায় কাদের কাছে প্রশিক্ষণ নিয়েছে, কাদের আশ্রয়ে ছিল, কারা তাদের অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহ করেছে, তাদের সবাইকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ঘটনার মূল হোতাদের গ্রেফতারে একের পর এক অভিযান চালানো হচ্ছে। কিন্তু জঙ্গিরা ঘন-ঘন অবস্থান পরিবর্তন করায় এখনো তাদের গ্রেফতার সম্ভব হয়নি।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড হচ্ছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম চৌধুরী। তার পরিকল্পনাতেই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালানো হয়। মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী প্রায় দুই বছর আগে কানাডা থেকে দেশে আসে। এরপর থেকে জেএমবির একটি অংশের নেতৃত্ব দিতে থাকে সে।
মূলত দেশিয় জঙ্গি সংগঠনের আন্তর্জাতিক যোগাযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তামিম। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, সিলেটের বাসিন্দা তামিম চৌধুরী দেশের ভেতরেই আত্মগোপনে আছেন বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে। তাকে ধরতে নানামুখী তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
তামিম চৌধুরী ছাড়া আরো কয়েকজন মাস্টারমাইন্ডের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। গুলশান হামলায় জড়িত জঙ্গিরা উত্তরাঞ্চলের গাইবান্ধা ও সিরাজগঞ্জের চরাঞ্চলের একাধিক বাসায় প্রশিক্ষণ নেয়। কল্যাণপুর অভিযানে নিহত ঢাকা অঞ্চলের জেএমবি’র কমান্ডার জঙ্গি রায়হান কবির ওরফে তারেক ছিলো তাদের প্রশিক্ষক। এছাড়া আরো কয়েকজন প্রশিক্ষককে শনাক্ত করা হয়েছে। যাদের কাজই হলো যারা অপারেশনে যাবে তাদের অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণ দেয়া।
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘গুলশান হামলার মাস্টার মাইন্ডসহ মদদদাতাদের কয়েকজনের নাম আমরা পেয়েছি। তাদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আইজিপি বলেন, ‘গুলশানে যে অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে তা আগেও ব্যবহার করা হয়েছে। অস্ত্র যে আধুনিক তা বলবো না। তবে আমরা অস্ত্র এবং এর উৎসের সন্ধানও পেয়েছি।’
একই দাবি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ারও। তিনি বলেন, ‘গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার ‘মূল হোতাদের’চিহ্নিত করা হয়েছে। কিভাবে হামলা হয়েছে, কারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের তথ্যসূত্র পাওয়া গেছে। তাদের গ্রেফতার এখন ‘সময়ের ব্যাপার।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থলের গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে, সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সবমিলিয়ে বলা যায়, তদন্তে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে।’
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/পিএসএস/এসজি