
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিলের ঘোষণা দিয়েছেন এবং ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার সংসদে এক বিবৃতিতে প্রতিবাদ বিক্ষোভে জনজীবন ক্ষতিগ্রস্ত এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষা কর্মকাণ্ড ব্যাহত হওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ ভোগান্তি ও গোলযোগ বন্ধে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করা হলো’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কেউ অফিস-আদালতে যেতে এবং কাজকর্ম করতে পারছে না। সব জায়গাতেই এ অবস্থা বিরাজ করছে। জেলায় কোটা আছে। কিন্তু সেই জেলায় যে ইউনির্ভার্সিটি রয়েছে সেখানেও তারা রাস্তায় নেমে যাচ্ছে। যখন জেলায় যারা তারাও কোটা চায় না, তারাও রাস্তায় নেমে গেছে। যখন কেউ-ই চায়না, তখন কোনো কোটাই থাকবে না, কোনো কোটারই দরকার নেই।’
তিনি বলেন, ‘কোনো কোটার দরকার নেই। ঠিক আছে, বিসিএস যেভাবে পরীক্ষা হচ্ছে সেভাবে মেধার মাধ্যমে সব নিয়োগ হবে। এতেতো আর কারো আপত্তি থাকার কথা নয়। আর যারা প্রতিবন্ধী বা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী তাদের আমরা অন্যভাবে চাকরির ব্যবস্থা করে দেবো। তারাও জয়েন্ট করতে পারবে।’
তিনি বলেন, ‘যারা কোটায় সুযোগ পাচ্ছে তারাওতো মেধাবী, সেখানেও তো মেধা থেকেই নিয়োগ হচ্ছে। কাজেই তাদের মেধাকেও যদি আমরা ধরি, তাহলে দেখা যাচ্ছে শতভাগই মেধাবী নিয়োগ পাচ্ছে। তারপরও আন্দোলন চলছে, তারা রাস্তা বন্ধ করে রাখছে। এমনিই যানজট, তার ওপর তীব্র যানজট। রোগী যেতে পারছে না হাসপাতালে। দেখা যাচ্ছে গাড়িতেই মারা যাচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা জাতীয় সংসদে সরকার দলীয় সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের এক সম্পূক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন।
সংসদ নেতা বলেন, ‘আমি ছাত্রদের বলবো- তারা তাদের আন্দোলন অনেক করেছে। এখন ক্লাসে ফিরে যাক, তারা ভিসির বাড়ি ভেঙ্গেছে এবং লুটপাট করেছে। সেই লুটের মাল কোথায় আছে, কার কাছে আছে, ছাত্রদেরই তা খুঁজে বের করে দিতে হবে। সেই সাথে যারা এই ভাঙচুর লুটপাটের সাথে জড়িত তাদের অবশ্যই বিচার হতে হবে।’
এর আগে ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকারি চাকরিতে আর কোনো কোটা পদ্ধতি থাকবে না।
ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন বুধবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান।
ছাত্রলীগের সভাপতি জানান, আজ সকাল ১০টার দিকে তারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারা কোটা সংস্কার আন্দোলনের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। এর পর প্রধানমন্ত্রী এমন সিদ্ধান্তের কথা তাদের জানান।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এ বিষয়ে আজ বিকালে সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী বিস্তারিত তুলে ধরবেন।
এই পরিস্থিতিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, আমাদের দাবি নিয়ে, ছাত্রদের দাবি নিয়ে আমরা কথা বলেছি প্রধানমন্ত্রীর সাথে। সেই দাবি মেনে নিয়ে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন কোটা ব্যবস্থা সরকারি চাকরিতে থাকবে না’।
ছাত্রলীগের সভাপতি আরো বলেন, এর আগে তিনি একটা টাইমলাইন দিয়েছিলেন, এখন স্পষ্টভাবে বলেছেন। এরপরে আর কোনো আন্দোলন থাকার যৌক্তিকতা আমরা দেখি না’।
এর আগে আজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী বুধবার কোটা সংস্কারের বিষয়ে কথা বলতে পারেন।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা: জাই