
সাভার: শ্রমিক অসন্তোষের কারণে আশুলিয়ার ৫৫ তৈরি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে মালিকপক্ষ।শ্রমিকেরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে শান্তিপূর্ণভাবে কাজে ফিরলে কারখানা খুলে দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে আশুলিয়ার ২০-২৫ জন কারখানার মালিকের সঙ্গে বৈঠক করেন তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নেতারা। রাজধানীর বিজিএমইএ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে করে আশুলিয়ার ওই কারখানাগুলো বন্ধের সিদ্ধান্ত জানান বিজিএমইএর নেতারা।
কারখানা বন্ধ হলেও শ্রমিকদের চাকরি থাকবে। তবে তাঁরা বেতন পাবেন না বলে জানান তারা।
বেতন বৃদ্ধি, শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে আশুলিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষ বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার ১৭টি কারখানার শ্রমিকেরা নতুন করে আন্দোলনে নামেন। সকাল নয়টার দিকে শ্রমিকেরা আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়ক অবরোধ করে যানবাহন ভাঙচুরের চেষ্টা চালান। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে এবং ধাওয়া করে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, নয় দিন ধরে আশুলিয়ায় শ্রম সমস্যা চলছে। শুরুতে একটি কারখানায় সমস্যা থাকলেও পরে তিন-চারটি কারখানায় সীমাবদ্ধ ছিল। তবে তিন দিন ধরে সমস্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। শ্রমিকেরা কারখানায় এসে ‘কার্ড পাঞ্চ’ করে বেরিয়ে যাচ্ছেন। কারখানার মালিকেরা এ বিষয়ে যথেষ্ট ধৈর্য ধরেছেন। শ্রমিকেরা সম্পূর্ণ অবৈধভাবে কর্মবিরতি করছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে রোববার ও সোমবার সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী আশুলিয়ার শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে শ্রমিকেরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে কাজে যোগ দেবেন এমন সিদ্ধান্ত হয়। বিষয়টি উল্লেখ করে বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, শ্রমিকেরা তাঁদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি। এই অবস্থায় যে কারখানার শ্রমিকেরা কাজ করছেন না, সেসব শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছেন উদ্যোক্তারা। কোনো শ্রমিক কাজ না করলে আইন অনুযায়ী ওই সময়ের জন্য বেতন পাবেন না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সাবেক তিন সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী, শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও আতিকুল ইসলাম, এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, বিজিএমইএর সহসভাপতি ফারুক হাসান, মোহাম্মদ নাছির, মাহমুদ হাসান খান প্রমুখ। এর আগে আশুলিয়া এলাকার কারখানার মালিকদের সঙ্গে বিজিএমইএ নেতাদের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতির বেসরকারি খাত উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা: প্রণব