
ঢাকা: গাজীপুরের আওয়ামীলীগ নেতা আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে খালাসপ্রাপ্ত ১১ জনের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল আবেদন করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। সোমবার রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আবেদন করার কথা সাংবাদিকদের নিশ্চিত করে জানান।
খালাস পাওয়া ১১ আসামি হলেন, আমির হোসেন, জাহাঙ্গীর ওরফে বড় জাহাঙ্গীর, ফয়সাল (পলাতক), লোকমান হোসেন ওরফে বুলু, রনি মিয়া ওরফে রনি ফকির (পলাতক), খোকন (পলাতক), দুলাল মিয়া, রাকিব উদ্দিন সরকার ওরফে পাপ্পু, আইয়ুব আলী, জাহাঙ্গীর (পিতা মেহের আলী) ও মনির। ১১ জন এর মধ্যে তিন জন আসামি পলাতক যারা মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত হয়েছেন।
এর আগে গত ১৫ জুন আওয়ামী লীগ নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় ৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। অপরদিকে ১১ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ জানান, ‘আহসানউল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্তদের রায় স্থগিত চেয়ে আমরা চেম্বার আদালতে আপিল করেছি। আগামীকাল আবেদনের ওপর সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ কোর্টে শুনানি হতে পারে।’
আবেদনের কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমরা খালাসপ্রাপ্তদের রায় এজন্য স্থগিত চেয়েছি যেন মামলার রায়ের অনুলিপি প্রকাশিত হওয়ার পর আসামিরা বের হয়ে যেতে না পারে। কারণ তাদের বিরুদ্ধে আমরা আপিল বিভাগে নিয়মিত আপিল করব। এই মামলায় নিম্ন আদালতে দণ্ড পাওয়া ২৮ জনের মধ্যে হাইকোর্টে খালাস পান ১১ জন। যার মধ্যে তিনজন পলাতক রয়েছেন।
এর আগে ১৫ জুন আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ২২ জনের মধ্যে ছয় জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। নিম্ন আদালতে ২২ জন আসামী মৃত্যুদণ্ড ও ৬ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন।
আসামীদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড বহাল রয়েছে : নুরুল ইসলাম সরকার, নুরুল ইসলাম দিপু, মাহবুবুর রহমান মাহবুব, শহীদুল ইসলাম শিপু (পলাতক), হাফিজ ওরফে কানা হাফিজ ও সোহাগ ওরফে সরু।
মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছে মোহাম্মদ আলী, আনোয়ার হোসেন আনু, জাহাঙ্গীর ওরফে ছোট জাহাঙ্গীর (পিতা আবুল কাশেম), রতন মিয়া ওরফে বড় রতন, আবু সালাম ওরফে সালাম ও সৈয়দ আহমেদ হোসেন মজনু, মশিউর রহমান মশু। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দেয়া হয় আমির হোসেন, বড় জাহাঙ্গীর পিতা নূর হোসেন, ফয়সাল, লোকমান হোসেন ওরফে বুলু, রনি মিয়া ওরফে রনি ফকির, খোকন ও দুলাল মিয়াকে। ছোট রতন ও আল আমিন মারা যাওয়ায় নিস্পত্তি পান তারা।
যাবজ্জীবন বহাল রয়েছে নুরুল আমিনের। যাবজ্জীবন থেকে খালাস পেয়েছেন রাকিব উদ্দিন সরকার ওরফে পাপ্পু, আইয়ুব আলী, জাহাঙ্গীর (পিতা মেহের আলী) ও মনির।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত কিন্তু আপিল করেননি ওহিদুল ইসলাম টিপু (পলাতক)। তার বিষয়ে কোন আদেশ দেননি হাইকোর্ট। তাই আসামীদের মধ্যে ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১১ জন খালাস পেয়েছেন। তাদের খালাস স্থগিত চেয়ে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/এফএইচ/এসআই