
ঢাকা: আওয়ামী লীগ সরকার দেশ এবং দেশের যুব সমাজকে ধ্বংস করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
বর্তামন সরকারকে স্বৈরাচারী উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের লোকজনই দেশে সন্ত্রাস করছে।
রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে ছাত্রদলের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ছাত্রদলকে নতুন ভাবে গড়ে উঠতে হবে, ডিসিপ্লিন শিখতে হবে। কারণ ভবিষ্যতে তারাই বিএনপিকে নেতৃত্ব দিবে। এ সরকারের লুট, খুন থেকে দেশকে বাঁচানোর জন্য স্লোগান শিখতে হবে। প্রশিক্ষণ দেয়া হবে যাতে তোমরা সোনা হয়ে এসে দেশকে রক্ষা করতে পার।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এরশাদ স্বৈরাচারের চেয়েও হাসিনার সরকার এক ধাপ এগিয়ে। দেশের বর্তমানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ। দেশের রাজনৈতিক নেতা, আইনজীবী, সিনিয়র নাগরিকদের অপমান করছে আওয়ামী লীগ।
খালেদা জিয়া বলেন, হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে কোনো ক্ষেত্রেই ভালো কিছু হয়নি। ব্যাংক ডাকাতি, দেশে অর্থনীতি ধ্বংস, শিক্ষার মান অনিশ্চিত করে নতুন প্রজন্মকে ধ্বংস করছে সরকার। তারা ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে চায়। তাই প্রতিদিনই নতুন নতুন আইন পাস করছে। কিন্তু তারা তো নিজেরাই অবৈধ, জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত নয়। তাই তারা কিসের আইন পাস করছে। কোনো আইন পাস করার অধিকার তাদের নেই।
শেখ মজিবুর রহমানকে ইঙ্গিত করে বেগম জিয়া বলেন, তিনি (শেখ মজিবুর রহমান) পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশের নয়। তাকে বারবার কাকতি-মিনতি করার পরেও তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। ঘোষণা দিয়েছিলেন জিউয়ার রহমান।
সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, পুলিশ দিয়ে গুম, হত্যা, গ্রেফতার বন্ধ করতে হবে। পুলিশ দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করবে। কথায় কথায় বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা বন্ধ করতে হবে। পুলিশ ধরে নিয়ে গিয়ে পায়ে গুলি করে। তারা যে দলেরই হোক কিন্তু তারা তো মানুষ। গুলি করার সময় তাদের কি একটুও দয়া লাগে না।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, নতুন বছরে আশা করেছিলাম হত্যা বন্ধ হবে। কিন্তু নতুন বছরের শুরুতেই হত্যা শুরু হয়েছে। রংপুর, গাইবান্ধা সহ বিভিন্ন এলাকায় হত্যা হচ্ছে। আমি কোনো দল বুঝি না হত্যা বন্ধ করতে হবে।
ভারতের বিএসএফ’র প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ভারতের বিএসএফ সদস্যরা ফেলানিদের মতো অসংখ্য বাংলাদেশি হত্যা করছে তখন কোনো শিয়াল ডাক দেয় না। আর খালেদা কিছু বললেই শিয়ালরা ডাক দিয়ে ওঠে।
দেশে সাম্প্রদায়িক হামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাঁওতাল পল্লীতে আগুন দিয়েছে পুলিশ। কিন্তু পুলিশ কাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, সরকারের দ্বারা। তাহলে বোঝায় যায় এ সরকার আমাদের আন্দোলনের সময় আওয়ামী সন্ত্রাসী এবং পুলিশ দিয়ে গাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ এবং আগুন দিয়েছিল। আর নাম দিয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীদের। তারা নিজেরা চুরি করে নাম দেয় অন্যের। তারা ব্যাংক ডাকাতি থেকে শুরু করে বিভিন্ন ভাবে দেশের সম্পদ লুটে খাচ্ছে। পদ্মা সেতুর নামে একের পর এক বাজেট বৃদ্ধি করে দেশের সম্পদ লুট করছে।
দেশে নামে মাত্র বিরোধী দল আছে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, দেশে যে বিরোধী দল আছে তাতে দেখে মনে হয় সাহেব বিবি। নিজেরা কখন কি বলে নিজেরাই জানে না। এরশাদ সাহেব আরো বাঁচতে চায়। তারা একক ভাবে নির্বাচন করবে।
বিএনপি চেয়ারপারসন জোর গোলায় বলেন, কে বলেছে বিএনপি রাজপথে নেই। বিএনপি রাজপথে ছিল আছে এবং থাকবে। সব কিছু গুছিয়ে নিয়ে আবারো ক্ষমতায় আসবে বিএনপি।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, ড. সাঈদ খান, ভাইস চেয়ারম্যান আমান উল্লাহ আমান, শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ছাত্রদল সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান সহ ছাত্রদলের নেতকর্মীরা।
প্রতিবেদক: শেখ রিয়াল, সম্পাদনা: জাহিদ