
চট্টগ্রাম: মানবিক বিভাগ এবং তিন পার্বত্য জেলার সামগ্রিক ফলাফল এইচএসসি পরীক্ষার এবারের ফলাফলে দেশের অন্যান্য বোর্ডের তুলনায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডকে পিছিয়ে দিয়েছে। বোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন, মানবিক শিক্ষার্থীরা ইংরেজি ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে খারাপ করায় তাদের গড় পাসের হার কমে গেছে।
দেশের সামগ্রিক ফলাফল ৭৪.৭০ শতাংশ হলেও চট্টগ্রামে শতকার পাসের হার ৬৪.৬০ শতাংশ। দেশের আটটি শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে চট্টগ্রামের নীচে পাসের হার হচ্ছে কুমিল্লা বোর্ডের ৬৪.৪৯। আর সবচেয়ে বেশি পাস করেছে যশোর বোর্ডে ৮৩.৪২ শতাংশ।
ফলাফল ঘোষণাকালে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহমুদুল হাসান বলেছেন, মানবিক বিভাগের ফলাফল এবং তিন পার্বত্য জেলার ফলাফলের কারণে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ড পিছিয়ে গেছে।
ঘোষিত ফলাফলে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এবছর গত বছরের তুলনায় কিছুটা ভালো ফলাফল করলেও মানবিক বিভাগে পাসের হার কমেছে। ২০১৫ সালে মানবিকে পাসের হার ছিলো ৫২.৩৩, এবছর পাসের হার ৫১.৬২ শতাংশ। এর বিপরীতে এবছর বিজ্ঞান বিভাগে পাসের হার হচ্ছে ৭৬.৬৬ এবং বাণিজ্য বিভাগে ৭০.৮৫। এই দুই বিভাগে এ বছরের ফলাফল ২০১৫ সালের চেয়েও ভালো হয়েছে।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহমুদুল হাসান আরো জানান, ‘মানবিকের শিক্ষার্থীরা ইংরেরি এবং তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে খারপ করেছে, সেই কারণে তাদের গড় ফলাফল খারাপ হয়েছে।’
এই বিষয়ে চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ জেসমিন আক্তার বলেছেন, ‘মানবিকের শিক্ষার্থীরা টেকনিক্যাল বিষয়গুলোতে একটু দুর্বল থাকে সাধারণত, আর মেধার দিক দিয়ে পেছানো শিক্ষার্থীরাই মানবিক বিভাগে পড়াশোনা করে।’
চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থীরা আইসিটি বিষয়ে ভালো ফলাফল করেছে বলেও দাবি করেন অধ্যক্ষ জেসমিন আক্তার।
এইদিকে, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পাঁচটি জেলার মধ্যে এবছরও যথারীতি তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান জেলার শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে আছে পাসের হারে। রাঙ্গামাটিতে পাসের হার ৪৭.১৪, খাগড়াছড়িতে পাসের হার ৫১.৭০ এবং বান্দরবানে পাসের হার ৬১.৬৪।
অথচ চট্টগ্রাম মহানগরে এককভাব পাসের হার ৭৬.৯৬, জেলার পাসের হার হচ্ছে ৬৭.৫৮। জেলা ও মহানগর মিলিয়ে চট্টগ্রামের পাসের হার ৬৭.৫৮।
তিন পার্বত্য জেলায় পাসের হার ভালো হলে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার দেশের অনান্য বোর্ডের তুলনায় ভালো হতো বলে দাবি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাহমুদুল হাসানের।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ৮৭ হাজার ৪৬৩ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ৪৩ হাজার ৫১২ জন এবং ৪৩ হাজার ৯৫১ জন ছাত্রী।এরমধ্যে পাস করেছে ৫৬ হাজার ১৮ জন।
২২৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এসব শিক্ষার্থী মোট ৯৭টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১৪ হাজার ৭৮৯, ব্যবসায় শিক্ষা থেকে ৩৯ হাজার ৬৬২, মানবিক থেকে ৩৩ হাজার ৭ এবং গার্হস্থ অর্থনীতি থেকে ৫ জন অংশ নেয়।
প্রতিবেদক-সালেহ নোমান, সম্পাদনা-জাহিদুল ইসলাম