
কনক হায়দার:
সরকার সমর্থিত সংগঠন ‘সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন’ এর আহব্বানে ডাকা ৪৮ ঘন্টার কর্মসূচী “কর্মবিরতি” শুধু কর্মবিরতিতেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। সারা দেশব্যাপী এই কর্মসূচীর নামে যা ঘটেছে, তাতে পরিবহন খাত যে এক শক্তিশালী মাফিয়া চক্রে রূপ লাভ করেছে, সেটাই নাগরিক সমাজকে আবারও মনে করিয়ে দিল। স্কুল/কলেজগামী কিংবা পরীক্ষার্থীর স্কুল, কলেজ কিংবা পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছুতে বাঁধা দেয়া, চোখে মুখে, চেহারা জুড়ে, স্কুল শিক্ষার্থীর ইউনিফর্মে পোড়া মবিল মাখিয়ে দিয়ে, মুমূর্ষু রোগী পরিবহনের এ্যাম্বুলেন্স আটকে দেয়ার কর্মসূচী আর যাই হোক ‘কর্মবিরতি’ নয়, বরং সেটা নৈরাজ্য ছাড়া আর কোন কিছু দিয়ে সংজ্ঞায়িত করা যায় না।
পরিবহন খাতেরই আরেকটি সংগঠন, বাংলাদেশ পণ্য পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ যেখানে গতকালকের ডাকা এই কর্মসূচী প্রত্যাখ্যান করেছে, সেখানে ‘সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন’ এর নেতা কর্মীর এই উচ্ছন্নে যাওয়া আচরণ, এই নৈরাজ্যের দায়ভার কি সংগঠনটির কার্যকরী পরিষদের সভাপতি জনাব শাহজাহান খান কি নেবেন?
মৌলভিবাজারের বড়লেখা উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুটন মিয়ার ৭ দিন বয়সের অসুস্থ শিশুর, সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগামী এ্যাম্বুলেন্স আটকে দেয়া হল। ফলশ্রুতিতে, শিশুটির মৃত্যূ।
এই মৃত্যূর দায়ভার কি জনাব শাহজাহান নিবেন? ‘বিচ্ছিন্ন ঘটনা’র তকমা দিয়ে এতসব নৈরাজ্যের দায় এড়াতে কাউকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমতায়িত করা হয়নি। নাকি সরকারের সংসদের শেষ অধিবেশনকে মাথায় রেখে এই নৈরাজ্যের পরিকল্পনা, যেটা স্পষ্টতঃই বিবেচ্য হতে পারে একটা ‘নগ্ন ব্ল্যাকমেইল’ হিসেবে।
হয়তোবা, আর সব অন্যায়, অবিচারের প্রক্ষিতে ন্যায় বিচার চাইতে, এই নৈরাজ্যেকে প্রতিরোধ বা নির্মূলের দাবীতে প্রধাণমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সচেষ্ট হবে নাগরিক সমাজ!

কনক হায়দার: