
সজিব ঘোষ, কুড়িগ্রাম: পরনের পোশাক বলতে শুধু হাফ প্যানটাই। বানের পানিতে ভিজে সূর্যের কল্যাণে শরীরেই শুকায় পরনের হাফ প্যান্ট। পেটের ক্ষুধায় দৌড়ানোরও জায়গা খুব একটা নেই। কেননা শিকারপুর চর নামক এই ‘দ্বীপের’ বাইরে যতদূর চোখ যায় শুধুই বন্যার পানি। আর এই অবস্থায় জীর্ণ দেহের চোখ দু’টোই পৃথিবীকে গিলে খাওয়ার জন্য যতেষ্ঠ। তাই তো হাতে এক টুকরো রুটি পাওয়া মানেই স্বর্গের স্বাদ পাওয়া।
দেশের বন্যা প্লাবিত অঞ্চল দেখতে গিয়ে কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুর থানার শিকারপুর চরেই নিউজনেক্সটবিডি ডটকম’র প্রতিনিধি দলের দেখা মিলে এমন দৃশ্যের। ছবি তুলেছেন- জীবন আহাম্মেদ।
ছবির প্রথম শিশুটির নাম মোফাজ্জল মিয়া। যে বয়সে থাকার কথা ছিলো হাসি মাখা মুখ, সে বয়সেই আজ ক্ষুধার ক্লান্তির ছাপ। এই রুটি হাতে নেয়ার নয় ঘণ্টা আগে পেটে দিয়েছিলো দুই মুঠ চিড়া। এত গেলো এক মোফাজ্জল, এরকম বহু মোফাজ্জল এখানে মিলবে অহরহ।
ওর কাছে জানতে চাওয়া হলো- স্কুলে যাও না? মোফাজ্জলের তাকানোর ভঙ্গি দেখে মনে হলো, প্রথমবাবের মতো শুনেছে ‘স্কুল’ শব্দটি। উত্তর দিলেন শিশুটির মা হালিমা আক্তার। তিনি বলেল, ‘খাওয়া পারি না, আমাগো আবার কিয়ের স্কুল’।
এই বন্যার সময় কাজের খোঁজে মোফাজ্জলের বাবা চলে যান শহরে। আর গৃহের কাজ, বন্যার পানি কিছুটা নেমে আসার পর ঘরে যা অবশিষ্ট আছে তা দিয়ে দিন পার করা। সেই সঙ্গে ত্রাণের নৌকা যদি আসে ওই আশায় তাকিয়ে থাকা। ত্রাণও এই অঞ্চলে মরীচিকার মতো, মনে হয় আসবে কিন্তু আসে না।
দেশে বন্যায় কবলিত দুর্গম এলাকাগুলোর মধ্যে এটিও একটি। এখানকার মানুষের দাবি, তাদের খোঁজ নিতে কেউ আসেনি। এনজিও ও সহায়তাকারী বিভিন্ন সংস্থাগুলো আসে না এই বিছিন্ন চরাঞ্চলে। যদিও স্থানীয় মেম্বার থেকে একবার চাল পেয়েছেন।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/এসজি/জাই