
গাইবান্ধা: সুন্দরগঞ্জের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন মারা গেছেন। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর রাত পৌনে ৮টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. বিমল চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের জানান, দীর্ঘ একঘন্টা চেষ্টার পরও এমপি লিটনকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তার বুকের বাম দিকে দুটো এবং বাম হাতে একটি গুলি লেগেছিল।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্যের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিকে নিহত লিটনের লাশ রংপুর মেডিকেলের হিমঘরে রাখা হয়েছে। সকালে ময়নাতদন্ত শেষে তার মরদেহ স্বজরদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দল গাইবান্ধার উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছেন।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার বামনডাঙ্গায় নিজ বাড়িতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে এমপি লিটন গুলিবিদ্ধ হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নেয়া হয়।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আতিউর রহমান নিউজনেক্সটবিডি ডটকমকে বলেন, সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন মাগরিবের পর নিজ বাসায় গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেলে নেয়া হয়। কে বা কারা তাকে গুলি করেছে সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। তদন্তের পরই বিস্তারিত জানানো যাবে।
লিটনের স্ত্রী খোরশেদ জাহান স্মৃতি সাংবাদিকদের জানান, সন্ধ্যায় বামনডাঙ্গার বাসায় ঢুকে দুইজন দুর্বৃত্ত তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় লিটনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, দুইটি মোটরসাইকেলে তিনজন এমপি লিটনের বাসায় আসে। তাদের দুইজন বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করেন আর একজন মোটরসাইকেলে বসে থাকে। এ সময় পর পর বেশ কয়েকটি গুলির শব্দ পাওয়া যায়। তারপরই দুর্বৃত্তরা বাড়ি থেকে দৌঁড়ে বের হয় এবং মোটরসাইকেলে উঠে দ্রুত পালিয়ে যায়।
এর আগে শিশুকে গুলি করে তীব্র সমালোচিত হয়েছিলেন গাইবান্ধার সরকারদলীয় এই সংসদ সদস্য। ওই ঘটনায় ২০১৫ সালের ১৪ অক্টোবর মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে গ্রেফতারও করেছিল গোয়েন্দা পুলিশ। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন।
২ অক্টোবর লিটনের ছোড়া গুলিতে ৯ বছর বয়সী সৌরভ আহত হয়। শিশুটির বাবা সুন্দরগঞ্জের গোপালচরণ গ্রামের সাজু মিয়া পরদিন লিটনকে আসামি করে সুন্দরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পরে ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন হাফিজার রহমান নামে উত্তর শাহাবাজ গ্রামের এক বাসিন্দা। মামলার পর থেকে লিটন ও পরিবারের সদস্যরা আত্মগোপনে ছিলেন।
প্রতিবেদন: প্রীতম সাহা সুদীপ, সম্পাদনা: জাহিদ