
ঢাকা: এবার যাত্রাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে জমি দখলে সহযোগিতা করার অভিযোগ করেছেন দনিয়া এলাকার বাসিন্দা বৃদ্ধা সুরাইয়া বেগম কামনা। শুধু তাই নয় হাত ব্যাগে ইয়াবা দিয়ে ওই বৃদ্ধাকে মাদকদ্রব্য আইনের মামলায় ফাঁসানো হয় বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বুধবার বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যাত্রাবাড়ি থানার ওসি আনিছুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ইয়াবা পেয়ে ওই মহিলাকে গ্রেফতার করেছিল। হয়তো জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে তার বাড়ি দখল হয়েছে। তবে ওই ঘটনার সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক নেই।’
অন্যদিকে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সুরাইয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘যাত্রাবাড়ী এলাকার দনিয়া মৌজার ৪৩২ খতিয়ানভুক্ত ১০২৫ দাগের ১০ শতাংশ জমি আমার বাবা মৃত গোলাম মর্তুজা আলী কিনেছিলেন। সেখানেই আমরা বসবাস করে আসছি। হঠাৎ স্থানীয় ভূমিদস্যু আবুল খায়ের আমাদের বাড়িটি দখলের পায়তারা শুরু করে। এ নিয়ে দফায় দফায় বিচার সালিশ হয়। এ বিষয়ে গত ১৪ আগস্ট যাত্রাবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এতে আবুল খায়ের আরো ক্ষুব্ধ হয়ে আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লাগে। পরে এ ঘটনায় আদালতে একটি মামলাও করা হয়। ওই মামলার সূত্র ধরে যাত্রাবাড়ী থানার ওসি ও খায়ের আমাদের ওপর বিভিন্ন চাপ সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে ওসি আমাকে বাড়িটি নামমাত্র টাকায় বিক্রির প্রস্তাব দেয়।’
তিনি বলেন, ‘জমি বিক্রিতে রাজি না হলে বিভিন্ন মামলার ভয়ভীতি দেখান ওসি। এক পর্যায়ে গতবছর ২৯ আগস্ট সকাল পৌনে ৭টার দিকে এসআই মোস্তফা কামাল আমার বাসায় ঢুকে তিন পিস ইয়াবা দিয়ে আমাকে থানায় নিয়ে যায়। ওই সময় আমার হাতব্যাগে থাকা ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে ভাড়া বাবদ তোলা ৩৫ হাজার ৭০০ টাকা ও একটি সোনার চেইন নিয়ে নেয় পুলিশ। থানায় নেয়ার পর ৪৫০ পিস ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে এমন অভিযোগে মামলা দিয়ে আমাকে কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ওই মামলায় রিমান্ডেও নেয় পুলিশ।’
সুরাইয়ার অভিযোগ, রিমান্ডে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। ওসি বারবার আবুল খায়েরের নামে তাকে জমি লিখে দিতে বলেন। এমনকি কারাগারে থাকা অবস্থায়ও লোক পাঠিয়ে তাকে জমি লিখে দেয়ার জন্য চাপ দেয়া হয়। বলা হয়, জমি লিখে দিলে এই মামলা থেকে অব্যহতি দেয়া হবে।
বৃদ্ধা সুরাইয়া আরো জানান, তাকে জেলে পাঠানোর পরপরই তার জমিটি দখল নিয়ে সেখানে স্থাপনা তৈরি করেন আবুল খায়ের। ওই জমিতে প্রবেশে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে; ওসিকে তা দেখানোর পরও তার নির্দেশে স্থাপনা তৈরির কাজ চলছে। এ অবস্থায় সরকারের বিভিন্ন দফতরে ঘুরেও কোনো বিচার পাচ্ছেন না তিনি।
তিনি বলেন, ‘স্থানীয় একটি সূত্রে জানতে পেরেছি আবুল খায়ের ওই জমিতে ভবন বানিয়ে সেখানে দুটি ফ্লাট ওসি সাহেবকে দেবেন বলে চুক্তি করেছেন। এ বিষয়ে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী বরাবরও লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।’
প্রতিবেদন: প্রীতম সাহা সুদীপ, সম্পাদনা: সজিব ঘোষ