
ঢাকা: ‘ভাইয়া এইটা এখন রণক্ষেত্র। ফায়ারিং এর শব্দে আমি অস্থির। দরজা-জানালা সব আটকেও থাকা যাচ্ছে না ।’ – কল্যাণপুরের পাঁচ নম্বর রোডের জাহাজ বাড়ি খ্যাত ভবনের পঞ্চম তলার জঙ্গি ডেরায় মঙ্গলবার ভোরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান শুরুর পর পাশের ভবনে বসবাসকারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী নিউজনেক্সটবিডি ডটকম প্রতিবেদককে এভাবে নিজের দশার কথা জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই শিক্ষার্থী ফায়ারিং এর শব্দ রেকর্ড করেও পাঠিয়েছেন। এর আগে ভোর পৌনে ছয়টায় ঘটনাস্থল থেকে নিউজনেক্সটবিডি ডটকম’র ফটোসাংবাদিক জীবন আহম্মেদ বলেন, ‘প্রচুর গুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছি আমরা (সংবাদকর্মিরা)। গত ১০ মিনিটে কমপক্ষে ৫০ রাউন্ড গুলি করা হয়েছে। তবে গুলি এক পক্ষ করছে, না উভয় পক্ষ তা বোঝা যাচ্ছে না।’
ভোর সাড়ে পাঁচটায় জীবন আহম্মেদ জানিয়েছিলেন, স্পেশাল উইপন্স অ্যান্ড ট্যাক্টিকস (সোয়াত), র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটিলিয়ান (র্যাব), পুলিশের বিভিন্ন বিভাগ এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মিরা ভবনটি ঘিরে রেখেছে। তবে সংবাদকর্মিদের সড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে প্রায় পাঁচশ গজ দূরে তাদের পথ আটকে রেখেছে ছাত্রলীগ ও সেচ্ছাসেবক লীগের স্থানীয় কর্মিরা। এদের কয়েকজনের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে লাঞ্চিত হয়েছেন দৈনিক যুগান্তরের ফটোসাংবাদিক নজরুল ইসলাম।
জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মিরপুর থানা পুলিশ, স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিলে কল্যাণপুরের মেস বাসায় জঙ্গিবিরোধী তল্লাশী শুরু করেন। ছয় নম্বর রোড থেকে তল্লাশী শুরু হয়। কয়েকটি মেসে অভিযান চালিয়ে তারা পাঁচ নম্বর রোডে পাঁচ নম্বর বাসায় অভিযান শুরু করে।
ভবনটির দোতলায় বাড়িওয়ালা থাকেন। তৃতীয় তলায় ফ্যামিলি ও ব্যাচেলররা থাকেন। চতুর্থ ও পঞ্চম তলায় চারটি করে ইউনিটের প্রত্যেকটাই মেস হিসেবে ভাড়া দেয়া।
পুলিশ যখন তৃতীয় তলায় ওঠে তখন পঞ্চম তলা থেকে সন্ত্রাসীরা আল্লাহু আকবার শ্লোগান দিয়ে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে ও হাত বোমা নিক্ষেপ করে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এতে একজন সন্দেহভাজন জঙ্গি গুলিবিদ্ধ হন। জঙ্গিদের আরেকজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে পুলিশ।
আটক দুই জঙ্গির বরাত দিয়ে একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মেসে ওরা ১১ জন থাকত। ভেতরে ভারী অস্ত্রসহ বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ রয়েছে। এখন ভেতরে আরো নয় জন রয়েছে।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/এসকে