
ঢাকা: কেরাণীগঞ্জের নব নির্মিত কেন্দ্রীয় কারাগারের যাত্রা শুরু হয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর নাজিম উদ্দিন রোড থেকে কেরাণীগঞ্জের নতুন কারাগারে কারাবন্দিদের স্থানান্তর করা হয়। শনিবার থেকে নব নির্মিত এ কারাগারের সকল কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম কার্য দিবসেই বাবুল নামের এক আসামি মুক্তি পেয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শনিবার প্রখর রোদ উপেক্ষা করে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত স্বজনরা বন্দিদের সাথে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করছেন। খোলা আকাশের নিচে প্রচন্ড রোদ উপেক্ষা করে বিশাল লাইনে দাঁড়িয়ে সাক্ষাতের টিকেট সংগ্রহ করছেন অনেকে।
এরই মধ্যে কেউ কেউ আবার দেখা করে বেরিয়েও আসছেন। তাদের দু-চারজনের সাথে কথা বলে জানা যায় বেশ আনন্দ আর উচ্ছাসের সঙ্গে বন্দিদের কেরানীগঞ্জের নতুন কারাগারে দিন কাটছে। অনেকদিন জরাজীর্ণ কেন্দ্রীয় কারাগারে থাকার পর নতুন কারাগারে স্থান পেয়ে বন্দিরা বেশ আনন্দিত।
কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির জানান, ১৯৮০ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারটি স্থানান্তরের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করার দীর্ঘ ৩৬ বছর পর এটি কেরানীগঞ্জে স্থানান্তরিত হল।
ঢাকা মাওয়া মহাসড়কের রাজেন্দ্রপুর বাসস্ট্যান্ডে নামার পর দূর থেকে যে কেউ দৃষ্টিনন্দন এ কারাগারটি দেখে মনে করবে সরকারী বা বেসরকারী আবাসন প্রতিষ্ঠানের বিশাল প্রকল্প এলাকা বা মেগাসিটি।
দৃষ্টিনন্দন ভবন দেখে যে কেউ থমকে যেতে পারেন। বাইরে থেকে কোনক্রমেই বোঝার উপায় নেই যে এটি কারাগার ভবন। বিশ্বের আধুনিক সকল কারাগারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই কারাগারটি নির্মাণ করা হয়েছে।
কারা এলাকার ভেতরে ও বাইরে বিশাল খোলা স্থান রয়েছে। সাধারণত বন্দীদের আলো বাতাস স্বল্পতায় অসুস্থ হয়ে যেতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে এ কারাগারটিতে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা রয়েছে।
কারা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মোট ১৯৪ দশমিক ৪১ একর জমির ওপর বিশাল এ কারাগারটি নির্মিত। বিশাল এলাকা জুড়ে মোট ৩টি কারাগার নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ কারাগার ২টি আর মহিলা কারাগার ১টি। ৩১ একর জমিতে তৈরি করা হয়েছে পুরুষ কারাগার । আর মহিলা কারাগারটি তৈরি হয়েছে ১১ একর জমির ওপর।
২০০৬ সালের একনেকে এ কারাগারটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিলেও জমি অধিগ্রহন, অর্থ সংকটসহ নানা জটিলতায় মূল নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১১ সালে।
নতুন এ কারাগারটি উদ্ধোধনের মধ্যদিয়ে প্রায় সোয়া ২শ’ বছরের ঐতিহ্য ভেঙ্গে ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোড থেকে কেরাণীগঞ্জে স্থানান্তরিত করা হলো কেন্দ্রীয় কারাগারটি। একই সাথে বদলে গেল কারা স্থাপনার লাল রং বা লাল দালানের কথাটিও ।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/পিএসএস