
ঢাকা: প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললে খুন ছাড়া আর কোনো খবর পাওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সোমবার ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে জাতীয় পার্টির ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্র্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, প্রতিদিন খুন হচ্ছে। বিচার বর্হিভূত হত্যা করা হচ্ছে। দেশের সম্পদ লুট করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই এমন দুর্নীতি হয়। প্রতিদিন দেশে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হচ্ছে। জঙ্গি বলে যাদের ধরা হচ্ছে তাদের তদন্ত শেষ হতেই হত্যা করা হচ্ছে। কারা জঙ্গি তার কোনো বিচার করা হচ্ছে না। প্রকৃত তথ্য উৎঘাটন করা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, আমরা এখন কঠিন সময়ের মধ্যে অবস্থান করছি। দেশে গণতন্ত্র নেই। হত্যা, খুন, মামলা, গ্রেফতার নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা বিরোধী দলকে সহ্য করতে পারে না। তারা বিভিন্ন কায়দায় একক শাসন ব্যবস্থা দিয়ে বাকশাল কায়েম করতে চায়। ২০১৪ সালে কোনো নির্বাচন হয়নি। তাদের নির্বাচনে কোনো ভোটার ভোট দেয়নি। নিজেদের ক্ষমতার জোরে ক্ষমতায় বসেছেন।
জাতীয় পার্টির মরহুম নেতা কাজী জাফর আহম্মেদের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, কাজী জাফর আহম্মেদের শূন্যতা পূরণ হওয়া সম্ভব নয়। স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, দেশের জনগণের স্বার্থে জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন সারা জীবন। তাকে আমরা হারিয়েছি কিন্তু তার স্মৃতিকে সামনে নিয়ে আমরা কখনো অপরাধের সঙ্গে আপোষ করবো না।
এরশাদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যে অন্যায় অপরাধ প্রথম থেকেই করেছেন তার কোনো ক্ষমা নেই। তার পরেও আপনি আবার ক্ষমতায় আসতে চান। অবৈধ সরকার থেকে নেমে এসে জনগণের কাতারে আসুন। জনগণের কথা বলুন।
দেশের সার্বিক অবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষার অবস্থা আজকে কেমন? সবাই জিপিএ পাঁচ পাচ্ছে কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছে না। দেশে কেউ নিরাপদ নয়। সাঁওতালদের বাড়িগুলোতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের নির্দেশে আগুন দিচ্ছে পুলিশ। নিজেদের রক্ষা করতে জাতীয় ঐক্যের দরকার কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার কি করছে, নিজেদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে বিরোধী দলকে দমন করার চেষ্ঠায় ব্যস্ত। তারা ঐক্য চায় না।
জবরদখলকারী, নিরযাতনকারী সরকারের পাল্লায় পড়েছে দেশের জনগণ। এ সরকারের হাত থেতে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে হবে। আমরা শুধু ২০দল জোট নয় যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে সবাই একত্র হয়ে দখলদার সরকারের বিরুদ্ধে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে বলে জানান মির্জা ফখরুল।
এ সময় মোস্তফা হায়দার বলেন, আমরা প্রতিমুহূর্তে শাসক গোষ্ঠীর অত্যাচার-জুলুম লক্ষ করছি। সরকার গণতন্ত্রকে নির্মূল করতে চায়। জাতিকে বাঁচানোর জন্য শেখ হাসিনার সরকারের পতন ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারে জাতীয় পার্টি সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে।
জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডক্টর টি আই এম ফজলে রাব্বি চৌধুরীর সভাপতিত্বে এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, প্রেসেডিয়াম সদস্য এস এম এম আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক মহসীন সরকার, জাতীয় পার্টি নেতা আহসান হাবীব লিংকন, আলী আব্বাস খান, খালেকুজ্জামান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট হোসনে আরা আহসান, আলহ্বাজ সেলিম মাস্টার, অ্যাডভোকেট শফিউদ্দিন ভূঁইয়া, জাফর উল্লাহ খান চৌধুরী ও এ এস এম শামীম।
প্রতিবেদক: শেখ রিয়াল, সম্পাদনা: জাহিদ