
পশ্চিমবঙ্গের খাগরাগড়ে দুই বছর আগে ঘটা এক বিস্ফোরণের বিচার শুরু হয়েছে।ভারতের সন্ত্রাস তদন্ত সংস্থা ন্যশানাল ইনভেস্টিগেটিং এজেন্সি বা এন আই এ-র এক বিশেষ আদালতে রুদ্ধদ্বার কক্ষে শনিবার বিচার শুরু হয়।খবর বিবিসির।
আদালতে পেশ করা চার্জশিটে এন আই এ বলেছে ওই বিস্ফোরণে জামায়েতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) সদস্যরা জড়িত।
এই মামলায় বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি নাগরিক সহ ২০ জন গ্রেফতার হয়েছেন। পলাতক দশ জনের মধ্যেও কয়েকজন বাংলাদেশির নাম রয়েছে।
২০১৪ সালের ২ অক্টোবর বর্ধমান শহর সংলগ্ন খাগরাগড়ের একটি বাড়িতে ওই বিস্ফোরণ ঘটে। প্রথমে একটা সাধারণ বিস্ফোরণ বলে ধারণা করা হলেও কয়েকদিন পরেই এর পিছনে বড় সড় ষড়যন্ত্র এবং সন্ত্রাসীদের যোগ থাকার ইঙ্গিত পায় পুলিশ। প্রথমে পুলিশের সিআইডি বিভাগ আর তারপরে তদন্তভার যায় এনআই এ-র হাতে।
তদন্ত চালিয়ে একটা বড় সন্ত্রাসী চক্রের হদিশ পায় এন আই এ – যেটাকে তারা দাবি করছে জেএমবির একটা মডিউল বলে।
এনআইএ’র দাবি, ভারতের জমি ব্যবহার করে এই সন্ত্রাসী মডিউল চালাচ্ছিল জেএমবি। বলা হয়েছে বাংলাদেশের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছিল ওই বিস্ফোরণে জড়িতরা।
পুরো বাংলাদেশ আর ভারতের তিনটি সীমান্তবর্তী জেলাতেও শরিয়া আইন বলবৎ করা এই সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্য ছিল বলেও এনআইএ চার্জশিটে উল্লেখ করেছে।
আদালতে জমা দেয়া চার্জশিটে এনআইএ দাবি করেছে যে পশ্চিমবঙ্গ আর আসামের বিভিন্ন জায়গায় মাদ্রাসা খুলে আদতে সেখানে সন্ত্রাসী কাজকর্মের প্রশিক্ষণ দেয়া হত।
জিহাদী ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গেই হিংসাত্মক কাজেরও প্রশিক্ষণ চলত ওই জায়গাগুলিতে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় ওই সন্ত্রাসীরা বেশ কিছু গোপন ঘাঁটিও তৈরি করে রেখেছিল।
এরকম বেশ কয়েকটি ঘাঁটিতে তল্লাশি চালিয়ে জিহাদী পত্রপত্রিকা, বিস্ফোরক তৈরির পদ্ধতি সম্বলিত পুস্তিকা প্রভৃতি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।
মডিউলের অন্তত দুজন পুরুষ সদস্য তাদের বিয়ে করা স্ত্রীদের সন্ত্রাসী মডিউলে সামিল করেছিল বলে তদন্তে উঠে আসে। ওই দুই নারীও গ্রেফতার হয়েছেন ঘটনাস্থল থেকেই।
বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ সহ নানা জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে অনেককে গ্রেফতার করা হয়। এজেন্সির কর্মকর্তারা বাংলাদেশেও তদন্তে গিয়েছিলেন। কলকাতা, হাওড়া এবং উত্তর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগণাও ওই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কাজকর্ম চলত বলে গোয়েন্দারা তদন্তে জানতে পেরেছেন।
বে-আইনী কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন, ভারতীয় দণ্ডবিধি, অস্ত্র আইন ও বিস্ফোরক আইন সহ নানা ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে।
বর্ধমান সদর থানার যে ভারপ্রাপ্ত অফিসার ওই ঘটনায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দায়ের করেছিলেন, সেই আব্দুল গফ্ফরের সাক্ষ্য গ্রহণ করেই রুদ্ধদ্বার কক্ষে আজ বিচার শুরু হয়।
সম্পাদনা-জাহিদুল ইসলাম