
ঢাকা: দেশের মানুষের ভাগ্য বদলাতে হলে গণবিরোধী, জাতীয় স্বার্থ ও মুক্তিযুদ্ধ চেতনা বিরোধী নীতি বদলাতে হবে- বলেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।
মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এবং মুক্তিযুদ্ধে রাজনীতির সপক্ষে সুদৃঢ় ঐক্য গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে সিপিবি’র চার দিনব্যাপী একাদশ কংগ্রেসের উদ্বোধনি অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। শুক্রবার দুপুর ২টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সিপিবির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও দেশি-বিদেশি রাজনৈতিক দলের অতিথিদের উপস্থিতিতে এ কংগ্রেসের উদ্বোধন হয়।
মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এবং মুক্তিযুদ্ধে রাজনীতির সপক্ষে সুদৃঢ় ঐক্য গড়ে তোলার প্রত্যয় ঘোষণা করেন সেমিল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পার্টির উপদেষ্টা শ্রমিকনেতা শহিদুল্লাহ চৌধুরী, জসিমউদ্দিন মণ্ডল ও মঞ্জুরুল আহসান খান বক্তব্য রাখেন।
এবার পার্টির কংগ্রেসে ১২টি দেশ থেকে মোট ২৬ জন প্রতিনিধি সংহতি জানাতে উপস্থিত হয়েছেন। এরমধ্যে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বাম রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক রাজ্য সভার সদস্য ডি রাজা, সিপিআই (এম) পলিটব্যুরোর সদস্য নীলাৎপল বসু, সিপিআই (এমএল)-এর সাধারণ সম্পাদক কে এন. পিল্লাই রামচন্দ্র, শ্রীংলকার প্রেমদারা দিশানায়েকে, পাকিস্তানের পীর জাদা আহমেদ বক্স, ব্রিটেনের অধ্যাপক জন ফস্টার, জার্মানির থমাস বেইসেনকেম্প, ভিয়েতনামের ন্যুয়েন টুয়ানফং, রাশিয়ার আলেকজান্ডার পোতাপভ, নেপালের সুরেন্দ্র প্রসাদ পান্ডের নেতৃত্বে ৮ জন সদস্য এতে অংশ গ্রহণ করেন।
সভাপতির বক্তব্যের পর ‘কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল’ গেয়ে উদ্বোধনী সমাবেশ শেষে একটি লাল পতাকা মিছিল বের হয় এবং তা নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
উদ্বোধনী সমাবেশে যোগ দিতে সকালে সদরঘাট এলাকায় বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, ঝালকাঠি ও চাঁদপুরের নেতা-কর্মীরা ঢাকায় আসেন।
চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে লাল পতাকা মিছিল নিয়ে ট্রেনে সকালে কমলাপুর আসে পার্টির নেতা-কর্মীরা। রেল-লঞ্চের পাশাপাশি বাসেও গাবতলী, কল্যাণপুর, সায়েদাবাদ ও গুলিস্তান দিয়ে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী ঢাকায় আসে।
সিপিবির দশম কংগ্রেস হয়েছিল ২০১২ সালের ১১-১৩ অক্টোবর। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ৪ বছর পর এবারের কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। এবার সারাদেশের ৬৮৩ জন প্রতিনিধি কংগ্রেসের প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন, যার মধ্যে ২১৭ জন নারী ও ১৭ জন আদিবাসী। এর বাইরে ১০৮ জনকে পর্যবেক্ষক মনোনীত করা হয়েছে। ৯৯ জন ভেটারেন সদস্যকে এই কংগ্রেসে বিশেষ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
এদের নিয়ে ২৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টা থেকে গুলিস্তানের কাজী বশির মিলনায়তনে শুরু হবে রুদ্ধদ্বার সাংগঠনিক অধিবেশন। একইদিন বিকেল ৩টায় বিদেশি প্রতিনিধিদের নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সাম্রাজ্যবাদ, নয়া উদারনীতিবাদ ও ধর্মীয় মৌলবাদ’ বিষয়ক এক আন্তর্জাতিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। ২৯-৩০ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭.৩০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মহানগর নাট্যমঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
গ্রন্থনা: ময়ূখ, সম্পাদনা: জাহিদ