
ঢাকা: ‘বাঙালি’ শব্দের আগে ‘দুষ্কৃতকারী’ শব্দ ব্যবহারের ব্যাখ্যা দিতে গাইবান্ধার পুলিশ সুপার(এসপি) মো. আশরাফুল আলমকে ৮ জানুয়ারি আবারও হাইকোর্টে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার নির্ধারিত দিনে হাইকোর্টের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
তলবের পরিপ্রেক্ষিতে ২ জানুয়ারি আদালতে হাজির হয়েছিলেন এসপি। তবে ওইদিন বিচারপতি মোহাম্মদ বজলুর রহমানের মৃত্যুতে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল। তাই তিনি আদালতে উপস্থিত হওয়ার বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে আদালতকে অবহিত করেন।
রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর করা আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, গত ১২ ডিসেম্বর তারিখের আদেশ মোতাবেক আমি ২ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় অত্র আদালতে স্ব-শরীরে উপস্থিত আছি। অতএব, মহোদয় সমীপে নিবেদন, আমার অদ্য তারিখে মহামান্য আদালতে স্বশরীরে উপস্থিত থাকার বিষয়টি মহোদয়ের অবগতির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্ত বিনীত অনুরোধ করছি।
তার এই লিখিত বক্তব্য আজ উপস্থাপন করা হলে ৮ জানুয়ারি পুনরায় তাকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। হাইকোর্টের একই বেঞ্চ ১২ ডিসেম্বর গাইবান্ধার এসপিকে স্বশরীরে তলব করেছিলেন।
অবকাশের পর হাইকোর্টের এই বেঞ্চকে রিটের পরিবর্তে ফৌজদারী মামলা শুনানির এখতিয়ার দেওয়া হয়েছে। এখতিয়ার পরিবর্তন সত্ত্বেও এই মামলাটি প্রধান বিচারপতি এই বেঞ্চকে শুনানি গ্রহণের জন্য অনুমতি প্রদান করেন।
সাঁওতালদের ঘটনা নিয়ে হাইকোর্টে দুটি রিট শুনানি চলছে। সেসব রিটের শুনানিকালে সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে দাখিল করা এক প্রতিবেদনে বাঙালী শব্দের আগে ‘দুষ্কৃতিকারী’ ব্যবহার করেন গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক (ডিসি)। তলবের প্রেক্ষিতে গত ১২ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে রেহাই পান।
তবে আদালতকে ডিসি জানান, পুলিশের দেওয়া এক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তিনি এই শব্দ ব্যবহার করেছেন। এজন্য সেদিনই গাইবান্ধার পুলিশ সুপারকে তলব করেন হাইকোর্ট। ওইদিন গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবদুস সামাদ তার ব্যাখ্যায় বলেন, সাঁওতালদের ঘটনায় এসপির দেওয়া রিপোর্টের আলোকে তিনি হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছি।
উল্লেখ্য, ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জে রংপুর চিনিকলের জমিতে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। এতে তিন সাঁওতালের মৃত্যু হয়। পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন।
সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে আদালতে মোট তিনটি রিট দায়ের করা হয়। সেসব রিটের প্রেক্ষিতেই ১৭ নভেম্বর সাঁওতালদের ধান কাটার সুযোগ দিতে অথবা ধান কেটে সাঁওতালদের বুঝিয়ে দিতে চিনিকল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সাঁওতালদের অবাধে চলাফেরার অধিকার নিশ্চিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রতিবেদন: ফায়েজ, সম্পাদনা: মাহতাব শফি