
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকাঃ ইউএনওকে গালিগালাজ করার ভয়েজ নিজের নয় বলে দাবি করেছেন ফরিদপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান চৌধুরী নিক্সন। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
তিনি বলেন, ‘এই ভয়েসটা আমারই না। প্রথমে আমি এসিল্যান্ডকে ফোন করেছিলাম। ‘আমি দেখছি’ বলে এসিল্যান্ড ফোনটা বন্ধ করে দেয়। পরে আমি আপাকে (টিএনও) ফোন করলাম যে, আপা আমার এ রকম একটা লোক ধরা পড়ছে আপনি একটু দেখেন, তার কোনো অন্যায় হয় নাই। সে মাঠে দাড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছিল। তাকে বিজিবি ধরে নিয়েছে আপনি একটু ব্যবস্থা নেন। এই কথাটুকুই আমি তাকে বলেছি। বাকি কোনো কথা আমার না। এটা ইউএনও সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলেই পাবেন।’
সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশিত গালিগালাজের বিষয়ে তদন্ত হওয়া উচিত জানিয়ে তিনি বলেন, আমার আর ইউএনওর কথাই শুধু ভাইরাল হয়নি, পুলিশ প্রশাসন ও ইউএনওর কথাও ভাইরাল হয়েছে। এটা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য কোনো মহল কাজটা করেছে। এটা সরকারের দায়িত্ব খুঁজে বের করা।
নিজের বিরুদ্ধে মামলা হলে তবে ডিসির বিরুদ্ধে মামলা হবে জানিয়ে এই সংসদ সদস্য বলেন, আমি যদি নির্বাচনী আইন ভঙ্গ করি তাহলে পরদিন সকালে ডিসি সাহেব নির্দেশ দিয়ে ইউএনওকে কেন আমার বাড়িতে পাঠালেন? ইউএনও কি নির্বাচনকালীন ৪৮ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে আমার বাড়িতে আসতে পারে? তাহলে তো সেও আইন ভঙ্গ করেছে। আমার কথা হল, আমি যদি আইন ভঙ্গ করে থাকি তাহলে ডিসি সাহেব আইন ভঙ্গ করেছে, নির্বাচনী আইন লঙ্ঘন করেছেন। তার বিরুদ্ধেও ক্যাবিনেটে ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলে আমি মনে করি। আমি যদি কোনো আইন ভঙ্গ করে থাকি তবে অবশ্যই আমার বিরুদ্ধে মামলা হবে। আমার একার বিরুদ্ধে কেন মামলা হবে? আইন ভঙ্গ তো ডিসিও ভঙ্গ করেছেন।
প্রসঙ্গত,শনিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিক্সন চৌধুরীর সমর্থিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ১১ হাজারের বেশি ভোটে বিজয় লাভ করে। কিন্তু রাত সাড়ে ৮টার দিকে নির্বাচন-পরবর্তী জনসভায় নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বিজয়ী প্রার্থী মো. কাওছার ও সংসদ সদস্য ও তার অনুসারীরা ১২ জন ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েনের কথা উল্লেখ করে স্থানীয় জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে চরম বিদ্বেষমূলক কথাবার্তা বলেন। দায়িত্বপালনরত ম্যাজিস্ট্রেটসহ জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে অত্যন্ত মানহানিকর এবং অশ্রাব্য ভাষায় হুমকি ও গালিগালাজ করেন। তার অনুসারীরা বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দেন যা একজন সংসদ সদস্য বা সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের পক্ষে অকল্পনীয়। নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গ করায় ভাঙ্গা উপজেলার এসি ল্যান্ড কর্তৃক একজনকে স্বল্পকালীন সময়ে আটকে রাখলে চরভদ্রাসনের ইউএনওকে উচ্চারণ অনুপযোগী অত্যন্ত অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন তিনি।