
গাইবান্ধা: গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ বাণিজ্যিক খামারের একটি আখক্ষেতে রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আধঘণ্টার চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
শনিবার দুপুরের দিকে এ ঘটনা ঘটে। এই অগ্নিকাণ্ডে ৩৩ বিঘা জমির আখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও জানা গেছে। রংপুর চিনিকলের যে ১ হাজার ৮৪২ একর জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সাঁওতাল পল্লিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে, সেই জমিরই একটি প্লটের আখক্ষেতে এই আগুন লাগার ঘটনা ঘটল।
রংপুর চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল আউয়াল জানান, খামারের ফকিরগঞ্জ এলাকার ১১ আই ব্লকের জমিতে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এতে খামারের ৩৩ বিঘা জমির দণ্ডায়মান আখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অগ্নিকাণ্ডের ব্যাপারে তদন্ত চলছে।
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও থানার ওসি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল হান্নান জানান, আগুনের সূত্রপাতের কারণ তদন্তের পর জানা যাবে।
১৮টি গ্রামের ১ হাজার ৮৪০ দশমিক ৩০ একর জমি ১৯৬২ সালে অধিগ্রহণ করে আখ চাষের জন্য সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার গড়ে তোলে চিনিকল কর্তৃপক্ষ। ওই এলাকায় মাদারপুর, বড় জয়পুর, ছোট জয়পুর—এই তিনটি গ্রামে প্রায় সাড়ে বারো’শ সাঁওতাল পরিবার বাস করে।
এই জমি ফেরত চেয়ে সাঁওতালরা ২০১২ সাল থেকে আন্দোলন করছে। বেশ কয়েকবার এখানে ঘরও তোলা হয়েছিল। সেসব ঘর মিল কর্তৃপক্ষ ভেঙে দেয়। চলতি বছরের গত ১ জুলাই সাঁওতালরা হরিণমারি, সাহেবগঞ্জ, মাদারপুর ও কুয়ামারা মৌজায় দুই শতাধিক একচালা ঘর তৈরি করে বসবাস শুরু করে।
৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় চিনিকল কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ অভিযান চালায়। চিনিকল শ্রমিক-কর্মচারীদের সঙ্গে বিপুলসংখ্যক পুলিশ-র্যাব উচ্ছেদে অংশ নেয়। এতে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের তিনজন মারা যায়।
সম্পাদনা: ইয়াসিন
আরো পড়ুন
বাংলাদেশে সাঁওতাল নিধন: মাতৃভূমে আদিবাসীর পরবাস