
চট্টগ্রাম: বন্দর নগরী চট্টগ্রামে রোববার সকাল থেকে কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি, কখনো ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে বাড়তি জোয়ারের পানি। বিকাল তিনটা পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৯৫.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।
গত এক সপ্তাহের তীব্র গরমে নগরবাসীর জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছিলো। কিন্তু কাঙ্খিত বৃষ্টি আর জোয়ারের পানিতে জনজীবনে নেমে এসেছে কিছুটা স্থবিরতা। স্বাভাবিক কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটেছে চট্টগ্রাম বন্দর ও শাহ আমানত আর্ন্তজাতিক বিমান বন্দরে।
রোববার সকাল থেকে শুরু হওয়া টানা বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলজট ও যানজট সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে গত শনিবারের বৃষ্টিপাতের ফলে নগরীর নিম্নাঞ্চলের বেশ কিছু এলাকায় সকালের দিকে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। নগরীর ষোলশহর ২নং গেটের আশপাশের মুরাদপুর, কাতালগঞ্জ, কাপাসগোলা, বাকলিয়া, চকবাজার, প্রবর্তক মোড়, আগ্রাবাদ ও হালিশহরসহ বিভিন্ন এলাকা ও সড়কে পানি উঠে যায়।
নগরীর বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকায় অফিসগামী ও স্কুল ফেরত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। চকবাজার গুলজার মোড় ও অলি খাঁ মসজিদ মোড় এলাকায় স্কুল-কলেজ থেকে ঘরমুখী শিক্ষার্থীদের গাড়ির জন্য দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। টানা বৃষ্টির কারণে যানবাহনের সংখ্যা কমে যাওয়ায় এ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে জানান পথচারীরা।
আগ্রাবাদের বাসিন্দা মাসুম জানিয়েছেন, সমগ্র আগ্রাবাদ এক্সেস রোড এলাকা দুপুরের পর থেকে জোয়ারের পানিতে তলিয়ে গেছে, এই এলাকার অনেক বাসা- বাড়ির নীচ তলায় পানি ঢুকেছে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ম্যানেজার উইং কমান্ডার রিয়াজুল কবির জানান, ভারী বৃষ্টির কারণে আন্তর্জাতিক রুটের দুটি বিমান কয়েক ঘণ্টা বিলম্বে অবতরণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘ফ্লাই দুবাই ও এয়ার এরাবিয়ার ফ্লাইট দুটি ভারী বৃষ্টির কারণে যথা সময়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে আসতে পারেনি, অবশ্য দুপুরের দিকে ফ্লাইট দুটি অবতরণ করে আবার ছেড়ে গেছে।’
চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক প্রশাসন জাফর আলম জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টির কারণে বন্দরের জাহাজ চলাচল ও পণ্য খালাসে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
এদিকে পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ্বজিত চৌধুরী জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ৪৭.২ মিলিমিটার গড় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সঞ্চালনশীল মেঘমালার কারণে দেশের চারটি সমুদ্র বন্দরে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত বহাল রেখেছে আবহাওয়া অধিদফতর। একই সঙ্গে উপকূলীয় এলাকা ও দেশের অধিকাংশ স্থানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড় ধসের পূর্বাভাসও জারি করা হয়েছে।
রোববার ভারী বর্ষণের পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকা বাড়তি জোয়ারে প্লাবিত হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
প্রতিবেদন: প্রতিনিধি, সম্পাদনা: ফারহানা করিম, জাহিদুল ইসলাম