
ঢাকা: চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে সারাদেশে রোববার দিনগত রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত একাধিক কথিত বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ঘটনায় রাজধানীসহ সারাদেশে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে কুমিল্লা, সাতক্ষীরা ও পিরোজপুরে দু’জন করে এবং ঝিনাইদহ, চাঁদপুর, পাবনা, নাটোর ও মুন্সীগঞ্জে একজন করে নিহত হয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভাষ্যে, তাদের অভিযানের সময় এবং মাদকের ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দু’দলে গোলাগুলিতে তারা নিহত হয়েছেন। তাদের দাবি, নিহতরা সবাই চিহ্নিত মাদক কারবারি। প্রত্যেকেরই বিরুদ্ধে থানায় মাদক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
কুমিল্লা: কুমিল্লায় মাদকবিরোধী অভিযান চলাকালে পুলিশের সঙ্গে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। রোববার মধ্যরাতে জেলার দেবিদ্বার উপজেলা সদরের অদূরে পশ্চিম ভিংলাবাড়ি এবং সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা এলাকায় এ দুটি বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- এনামুল হক ভূইয়া ওরফে দোলন (৩৫) এবং নুরু (৫৫)। এর মধ্যে দোলন পুলিশের ও নুরু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঢাকা: রাজধানীর মিরপুরে মাদক বিক্রির সময় ডিবি পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে অজ্ঞাত পরিচয় (আনুমানিক বয়স ৪০ বছর) এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। রোববার রাত ৩টার দিকে মিরপুরের রূপনগর ‘ট’ ব্লকে সরকারি কর্মচারীদের নির্মাণাধীন ভবনের পাশে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে ৪-৫ হাজার পিস ইয়াবা ও ১টি পিস্তল উদ্ধার করা হয়েছে।
চাঁদপুর: চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ আবু সাঈদ বাদশা ওরফে লাল বাদশা নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। রোববার মধ্যরাতে ফরিদগঞ্জের গুপ্টি ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। লাল বাদশা ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আবদুর রশিদ ছৈয়ালের ছেলে। তার বিরুদ্ধে ১০টি মাদকের মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জের মীরকাদিম পৌরসভায় দু’পক্ষের গোলাগুলিতে সুমন বিশ্বাস (৩৬) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় দু’দল মাদক ব্যবসায়ীর গোলাগুলিতে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। রোববার দিবাগত রাত ২টার কিছু পরে ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের পাশে জাড়গ্রাম নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশ নিহতের নাম-পরিচয় জানাতে পারেনি।
পিরোজপুর: পিরোজপুরে পুলিশের সঙ্গে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ২ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় ডিবি ও থানা পুলিশের ৮ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
ঘটনাস্থল থেকে ডিবি পুলিশ ১টি পাইপ গান, ৫ রাউন্ড গুলি, ২টি দা, ১৭৫টি ইয়াবা, ৫০ গ্রাম গাঁজা, অস্ত্র তৈরি ও মাদক সেবনের সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেছে। নিহত অহিদুজ্জামান স্বরুপকাঠী উপজেলার দক্ষিণ কৌরিখাড়া গ্রামের মৃত আ. রহমানের ছেলে। তার বিরুদ্ধে মাদক, সন্ত্রাসী, অস্ত্র মামলাসহ মোট ৮টি মামলা রয়েছে।
অন্যদিকে রাত ২টার দিকে মাদক উদ্ধার অভিযানের অংশ হিসেবে জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার বড় মছুয়া এলাকার খায়ের গনিপাড়া গ্রামে গেলে স্থানীয় ডাকাত ও মাদক ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান (৩৬) ও তার সঙ্গীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। সেসময় পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে ঘটনাস্থলেই মিজানুর রহমান মারা যায়। এতে মঠবাড়িয়া থানা পুলিশের ৬ সদস্য গুরুতর আহত হন।
সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার বাঁকালে দুই মাদক ব্যবসায়ীর গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি মাদক ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের মধ্যে গোলাগুলি করে নিহত হয়েছেন তারা। নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার ভোমরা গ্রামের আসগর আলির ছেলে খলিলুর রহমান পুটে (৪০) ও শহরের মধুমোল্লাডাঙ্গির এরফান কারিগরের ছেলে এমদাদ কারিগর (৪৮)।
নাটোর: নাটোরের সিংড়ায় র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ খালেক উদ্দিন নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ সময় একটি পিস্তল, কয়েক রাউন্ড গুলি ও বেশ কিছু মাদক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার রাত ২টার দিকে উপজেলার ভাগনাগরকান্দি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত খালেক উদ্দিন সিংড়ার বড় চৌগ্রামের আজাহার আলীর ছেলে।
গ্রন্থনা ও সম্পাদনা: এম কে রায়হান