
চুয়াডাঙ্গা: জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করলেও চেয়ারম্যান পদে নিজ দলের প্রার্থীর সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীসহ ৪ জন, সাধারণ সদস্য পদে ৫৮ ও সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ২৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন, আ.লীগের মনোনীত সদ্য বিদায়ী জেলা পরিষদের প্রশাসক ও দামুড়হুদা উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান মঞ্জু (মোটরসাইকেল) প্রতীক, আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য শেখ শামসুল আবেদীন খোকন (মোবাইল) প্রতীক, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন (আনারস) প্রতীক ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও ব্যবসায়ী মামুনুর রশীদ আঙ্গুর (ঘোড়া) প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এই নির্বাচনে নিজেদের প্রচার-প্রচারণায় ও ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী থাকা চেয়ারম্যান ও সদস্য পদপ্রার্থীরা।
আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় দলীয় নেতা-কর্মীরা দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের এম.পি ও জাতীয় সংসদের হুইপ বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন দলীয় মনোনীত প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মঞ্জুর পক্ষে জেলা নেতা-কর্মীদের কাজ করার জন্য ইতিমধ্যে নির্দেশ দিয়েছেন।
অপরদিকে, চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এম.পি আলী আজগার টগর এর নির্দেশে জীবননগর পৌর আ.লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ অমল, যুবলীগ নেতা ও চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু, জীবননগর পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর হোসেন. খাদিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানসহ অসংখ্য ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মী আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য সেখ শামসুল আবেদীন খোকনের সঙ্গে ভোটযুদ্ধে অংশ নিচ্ছেন।
এদিকে, জাতীয় পার্টি থেকে জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মামুন অর রশীদ আঙ্গুর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা একক প্রার্থী হওয়ায় তাদের অবস্থাও অনেকটা ভালো।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন জানান, আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে পৃথকভাবে দুই এমপি ভোটারদের বাড়ীতে ডেকে ভোট কিনছে। এই কেনা-বেচা ঠেকাতে প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানান তিনি।
আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য সেখ শামসুল আবেদীন খোকন দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, চেয়ারম্যান পদে আমিই জয়ী হবো।
আ.লীগের মনোনীত প্রার্থী মাহফুজুর রহমান মঞ্জু অভিযোগ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ উপেক্ষা করে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এম.পি আলী আজগার টগর বিদ্রোহী প্রার্থী কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়ামের সদস্য শেখ শামসুল আবেদীন খোকনের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। এটা আদৌ ঠিক নয়। তিনি ভোটারদের বাড়িতে ডেকে ঘরোয়া সভা করে খোকনের পক্ষে ভোট প্রদান এবং টাকার বিনিময়ে ভোট কিনে নিচ্ছে। যা নির্বাচনী আচরণ বিধি পরিপন্থি। তিনি আরও বলেন, প্রায় আড়াই বছর জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসাবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি তাই জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী। আচরণবিধি পরিপন্থি কর্মকাণ্ডের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করবেন বলেও তিনি জানান।
চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের এমপি আলী আজগার টগর বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এনেছে তা সঠিক নয়।
চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, আমাদের কাছে এখনো পর্যন্ত কেউ কোনো মৌখিক বা লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ এলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে ভোট বেচা-কেনা ঠেকাতে প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। আগামী ২৮ ডিসেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৫২৮ জন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন বলেও তিনি বলেন।
প্রতিবেদন: কামরুজ্জামান সেলিম, সম্পাদনা: মাহতাব শফি