
ঢাকা: শুক্রবার রাত থেকে অস্ত্রধারীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা গুলশান দুই নম্বরের হোলি আর্টিজান বেকারির জিম্মিদের উদ্ধারে অভিযান শুরু হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে আমাদের প্রতিবেদক প্রীতম সাহা সুদীপ বার্তা কক্ষকে জানান, শনিবার সকাল সোয়া সাতটার দিকে আটটি জীপ, তিনটি লরি ও নয়টি সাঁজোয়া যান নিয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে প্রবেশ করে। এর কিছুক্ষণ পর, সাড়ে সাতটার দিকে মুহুর্মুহু গোলাগুলির আওয়াজ শুরু হয়। যে কারণে সেখানে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীরা মনে করছেন, অভিযান শুরু হয়ে গেছে।
এর আগে প্রীতম বার্তা কক্ষকে জানিয়েছিলেন, অভিযানের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অপেক্ষায় আছেন তারা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ‘চূড়ান্ত’ নির্দেশ মিললেই শুরু হবে অভিযান । সেনা ও নৌ বাহিনীর কমান্ডো, বিজিবি, সোয়াত, পুলিশ ও র্যাবের সমন্বয়ে কমাণ্ডো অভিযানের প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানা গেছে। শনিবার ভোর পাঁচটার দিকেই এর প্রস্তুতি শেষ হয়।
এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পুলিশ প্রধান এ কে এম শহীদুল হক, র্যাব প্রধান বেনজীর আহমেদসহ বিভিন্ন বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা গভীর রাতে সরকারের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কয়েক ঘণ্টা বৈঠক করেন বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বরাত দিয়ে একটি সংবাদমাধ্যম নিশ্চিত করেছে। তারা আরো বলেছে, ওই বৈঠক শেষে পুলিশ ও র্যাব কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ফেরার পর ভোর পাঁচটার দিকে হ্যান্ড মাইকে সাধারণ পোশাকের সবাইকে সেখান থেকে সরে যেতে বলা হয়। গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা সাদা পোশাকে সেখানে আছেন, তাদের সবাইকে বাহিনীর ‘ভেস্ট’ পরিধানের নির্দেশ দেয়া হয়।
সকাল ছটার দিকে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি সেখানে উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। সাড়ে সাতটার পরপর সোয়াতের একটি দল একটি অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে ওই রেস্তোরার দিকে এগোতে থাকে। এরপরই কয়েক দিক থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সমন্বিত অভিযান শুরু করে।
এর আগে শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে অতর্কিত হামলায় আক্রান্ত হয় ওই রেস্তোরাটি। সেখানে থাকা জিম্মিদের মধ্যে কমপক্ষে ২০ জন বিদেশি নাগরিকসহ মোট ৪০ জনের মতো আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখানে গিয়ে পুলিশের অগ্রগামী দলের দুই কর্মকর্তা জঙ্গিদের গুলি ও বোমায় নিহত হন। আহত হন অন্তত ৪০ জন পুলিশ সদস্য। নিহতরা হলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন।
জঙ্গি হামলা চালিয়ে দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করার ঘটনা এ দেশে এটাই প্রথম। এর দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তবে দেশে তাদের অস্তিত্ত্ব বরাবরই অস্বীকার করে আসছে বাংলাদেশ সরকার।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/পিএসএস/এসকে