
ডেস্ক: বাংলাদেশে জঙ্গিদের টার্গেটের আওতা বাড়ছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়। এতে বলা হয়, গত বছর জঙ্গিদের লোমহর্ষক আক্রমনের শিকার হয়েছেন ধর্মনিরপেক্ষ ব্লগার- যারা ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন।
তবে সম্প্রতি তাদের আক্রমনের শিকার হয়েছেন অনেক শিক্ষক, প্রকাশক, অধিকার কর্মী, বিদেশি শ্রমিক এবং অমুসলিমরা- যারা ইসমলাম সম্পর্কে অবমাননাকর কথা বলছেন। পুলিশ এই সহিংসতা বন্ধ করতে প্রতিনিয়তই সংগ্রাম করে যাচ্ছে।
রোববার জঙ্গিরা হত্যা করে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে (৩৫)। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রামে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। সকালে মিতু তার ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে গেলে ৩ জঙ্গি তাকে নয়টি কোপ ও মাথায় গুলি করে মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বার কোনো নারীর ওপর আক্রমন করেছে জঙ্গিরা। এর আগে ব্লগার অভিজিতের সঙ্গে তার স্ত্রী বন্যাকেও আঘাত করেন তারা।
মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার নিষিদ্ধ ইসলামি গ্রুপ ‘জামাতুল মুজাহিদিন’র সদস্যদের আটক করতে একটি সাহসী অভিযান পরিচালনা করেছিলেন। যার ফলে তিনি পদোন্নতি পেয়ে রাজধানী ঢাকাতে চলে আসেন। পুলিশ জানায়, কোনো জঙ্গি দলের সদস্যদের আটক করতে তারা দ্বীধা করেননি। আর বাবুল জঙ্গিদের হামলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন।
রোববারই দুপুরে নাটোরে সুনিল গোমস (৬০) নামের একজনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। পরে ইসলামিক এস্টেট (আইএস) তাদের নিউজ এজেন্সি ‘আমাক’র মাধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে। এর আগেও আইএস অনেকগুলো হত্যার দায় স্বীকার করেছে।
প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, উগ্রপন্থিদের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার মধ্য দিয়ে ক্রমবর্ধমান ধর্মীয় উত্তেজনায় কাঁপছে বাংলাদেশ। ব্যক্তির উপর হামলার পাশাপাশি জাতিগত সহিংসতা উস্কে দেয়ার জন্য শিয়া মসজিদে হামলাও চালিয়েছে জঙ্গিরা।
১৯৭১ সালে স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই ধর্মনিরেপক্ষ হবে নাকি ইসলামি সরকার থাকবে- এই বিতর্ক বাংলাদেশের রাজনীতিকে ঘিরে আবর্তিত হচ্ছে। বর্তমান সরকার হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষ ও তারা মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসলামপন্থিদের (জামায়াতে ইসলামী) ‘বিতর্কিত’ বিচার পরিচালনা করছে। বিষয়টি অনেক মৌলাবাদী ও ইসলামপন্থিদের ক্ষুব্ধ করেছে।
ওয়াশিংটন পোস্ট লিখেছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধর্মনিরপেক্ষতার মূলবোধে প্রতিশ্রুতি দিলেও নিহত ও আহত নাস্তিক ব্লগারদের সমর্থনে কথা বলতে ইতস্তত বোধ করেছেন। ২০১৫ সালে টাইম ম্যাগাজিনকে তিনি বলেন, ‘ব্যাক্তিগতভাকে এই হত্যাকাণ্ড আমি সমর্থন করিনা, মেনে নেই না, কেনই বা নেব কারণ সবারই একটি বিশ্বাসের জায়গা আছে।
যদি কেই মনে করে তাদের কোনো ধর্ম নেই এটি তাদের ব্যাক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি। কিন্তু তাদের কোনো অধিকার নেই কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু বলা বা লেখার।’
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/আইকে/এসআই