
নিউজনেক্সট ডেস্ক ও নুসরাত জাহান তন্বী জাবি, সাভার ;
জাবিতে শীত মানেই জাঁকালো। কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে গুটিসুটি পায়ে শীত আসার শুরুতেই আসতে শুরু করেছে শীতের পাখিরা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃতি ও পরিবেশের প্রতি এখানকার অধিবাসীদের অকৃত্রিম ভালোবাসা বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আধুনিক গ্রামে পরিণত করেছে। তাই জাহাঙ্গীরনগরে শীতের আগমন কোনোভাবেই গ্রাম থেকে আলাদা নয়।
যারা শহরের মধ্যেও গ্রামের শীতের আমেজ পেতে চান তারা ঘুরে যেতে পারেন জাহাঙ্গীরনগর থেকে।
সকালে ফুটন্ত শাপলাগুলোতে পাখিদের লুকোচুরি সে এক অভিভূত করার মতো দৃশ্য। শুধু তাই নয়, শীতে এখানকার ছাত্র-শিক্ষকের সকালের ঘুম ভাঙে অতিথি পাখির কলকাকলিতে।
শীতের জাহাঙ্গীরনগরের ছবি দেখুন নুসরাত জাহান তন্বীর ক্যামেরায়; দেশি বিদেশি পাখির মেলা বসে জাবির লেকগুলোতে। এবছর পাখির তুলনামূলক কম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ওয়াইল্ড লাইফ রেসকিউ সেন্টার’র পেছনের লেক, জাহানারা ইমাম এবং রেজিস্ট্রার ভবন সংলগ্ন লেকে এসেছে অন্তত কয়েক হাজার অতিথি পাখি। উপযুক্ত পরিবেশ আর নিরাপদ আশ্রয়ে এসব অতিথি পাখি এখানে নির্ভাবনায় মেতে থাকতে পারছে কলকাকলি ও জলকেলিতে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোতে ১৯৮৬ সালে প্রথম পরিযায়ী পাখিরা আসতে শুরু করে। আগে দেশি-বিদেশি মিলে ১৯৫ প্রজাতির পাখির দেখা মিলতো। তবে এখন দেশি প্রজাতির সংখ্যাই বেশি।

জাবিতে শীতকাল মানেই হলো উৎসবের ধুম। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন: জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার, জলসিঁড়ি, চিরকুট, ধ্বনি, গীতনাট, জুডো, জাডস প্রভৃতি সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর টানা দুই মাস সাংস্কৃতিক কর্মসূচির ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করে ক্যাম্পাসবাসীকে শীতের আগমনী বার্তা পৌঁছে দেয়।

ঘন কুয়াশার সাথে হাড় কাঁপানো হিমেল বাতাস পুরো ক্যাম্পাসের পরিবেশকে আচ্ছন্ন করে ফেলে। ক্যাম্পাসের প্রত্যেকটি গাছ ও লতাপাতা শীতের ছোঁয়ায় ধারণ করে রুক্ষমূর্তি। গভীর রাত থেকে গাছের পাতায় শিশির বিন্দু জমতে থাকে। সকালে মাঠে মাঠে ঘাসের ডগায় বিন্দু বিন্দু জমে থাকা শিশির নতুন আবহের সৃষ্টি করে।

হেমন্তের শেষে জাবির লেকগুলোতে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে লাল শাপলা। ঋতু শীতের আগমনীবার্তা নিয়ে অতিথি পাখি প্রতি বছর বেড়াতে আসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরিযায়ী পাখিরা লেকগুলোর সৌন্দর্যের নতুন মাত্রা সৃষ্টি করে। এ যেন লাল শাপলার মাঝে অতিথিদের মিলনমেলা।

পাখিপ্রেমীদের মতে, এ বছর অতিথি পাখির সংখ্যা বিগত বছর গুলোর তুলনায় অনেক কম। ফলে চিরাচরিত সৌন্দর্য হারাচ্ছে জাবির লেকগুলো। লেকগুলোতে আগের মতো নেই পাখির চিরচেনা কলতান। একইসাথে উপযুক্ত পরিবেশের কারণেও কমছে পাখির সংখ্যা।