
ঢাকা: যেসব জঙ্গিরা প্রাথমিক পর্যায়ে ঘর বাড়ি ছেড়ে চলে আসতো, তাদের আশ্রয় দিতো র্যাবের কাছে গ্রেফতার হওয়া জেএমবি সদস্য মো. খাদেমুল ইসলাম ওরফে খাদেম। জঙ্গিদের আশ্রয় দেয়ার জন্য সে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা পেতো, গ্রেফতারকৃত মো. আতিকুর রহমান ওরফে মিলন সেই অর্থদাতাদের একজন।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) লুৎফুল কবির সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এর আগে দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর পল্লবীর লালমাটিয়া এলাকা থেকে জেএমবির দুই সদস্য আতিকুর এবং খাদেমকে গ্রেফতার করে র্যাব-৪। তাদের কাছ থেকে ৪টি ধারালো অস্ত্র, ৫টি জিহাদি বই, ২টি ব্যাগ, বিভিন্ন ধরণের লিফলেট এবং নগদ ৩৭ হাজার ৫৯৩ টাকা উদ্ধার করা হয়।
লুৎফুল কবির জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমরা জানতে পেরেছি গ্রেফতারকৃত আতিকুরের সঙ্গে ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসে ফেসবুকে জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের সদস্য ফজলে রাব্বীর সঙ্গে যোগাযোগ হয়। রাব্বী তার ফেসবুক আইডিতে যে সমস্ত জিহাদি পোস্ট দিত, সেগুলো আতিকুর নিজের আইডিতে শেয়ার করতো। পরবর্তীতে তাদের মধ্যে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে যোগাযোগ শুরু হয়। রাব্বী জুলাই মাসে আতিককে জেএমবি নেতা আব্দুর রহমানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেয়। র্যাবের অভিযানে আব্দুর রহমান নিহত হওয়ার পর আতিক জানতে পারে সে জেএমবির একটি গ্রুপের প্রধান ছিলেন।
তিনি জানান, জেএমবি নেতা আব্দুর রহমান বিভিন্ন সময় আতিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে বিভিন্ন জায়গায় অর্থ বহণের কাজে নিয়োগ করে। এরই ধারাবাহিকতায় আতিক গাজীপুরসহ কয়েকটি জায়গায় অর্থ দিয়ে আসে এবং টঙ্গীর একটি বস্তিতে অর্থ দিতে গিয়ে খাদেমুলের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। খাদেম তুরাগ থানাধীন ইস্টওয়েস্ট মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন একটি অফিসে পিয়ন হিসেবে কর্মরত ছিল। তার ছোট ভাই নাজমুল ২০১৩ সালে আজমপুর ছাপড়া মসজিদে জুম্মার নামাজের পর দেখতে পায়, কিছু অপরিচিত লোক সেখানে ল্যাপটপের মাধ্যমে মাওলানা জসীম উদ্দিন রহমানীর ওয়াজ শুনছে। তখন নাজমুল ওই ওয়াজ মোবাইলের মেমোরি কার্ডে লোড করে নেয় এবং খাদেমুলকে শোনায়। তখন থেকেই খাদেম ইসলামি জিহাদের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়।
র্যাব-৪ এর অধিনায়ক বলেন, ‘২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে টঙ্গী আহলে হাদীস মসজিদে নামাজ পড়ার সময় খাদেমের ছোট ভাই নাজমুলের সঙ্গে তাজুল ইসলামের পরিচয় হয়। তাজুল নামাজের পর নাজমুলকে নিয়ে ইসলামের বিভিন্ন দিক আলোচনা করতো এবং তাকে জিহাদী বিভিন্ন ভিডিও দেখাতো। নাজমুল ভিডিও দেখে খাদেমের সাথে জেএমবি সম্পর্কিত বিভিন্ন কথাবার্তা বলে। নাজমুল তার ব্যবহৃত মোবাইল সেটটি নিয়ে ওয়েব সাইট থেকে বিভিন্ন অডিও/ভিডিও ডাউনলোড করতো এবং খাদেমকে দেখাতো। এভাবেই তারা জেএমবির কার্যক্রমের সাথে যুক্ত হয়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
প্রতিবেদন: প্রীতম সাহা সুদীপ, সম্পাদনা: সজিব ঘোষ