
দেলোয়ার মহিন, ঢাকা: পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত ও রফতানি বাড়ানোর জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ ইনস্টিটিউট ও টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপন করা জরুরি বলে মনে করেন বিজিএপিএমইএ’র সভাপতি আব্দুল কাদের খান।
বৃহস্পতিবার নিউজনেক্সটবিডি ডটকম’কে দেয়া এক একান্ত সাক্ষাতকালে বাংলাদেশ গার্মেন্টস্ অ্যাক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন’র (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘ইন্সটিটিউট ও ল্যাবরেটরি স্থাপন করার কথা থাকলেও তা্ এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি। স্থাপন হলে এই খাতের ব্যাপক প্রসার ঘটবে।’
তিনি বলেন, ‘টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হলে আমাদের অতিরিক্ত অর্থ ও সময় বেঁচে যাবে। পণ্যের উৎপাদন খরচও কমে যাবে। একই সাথে ইনস্টিটিউট হলে আমরা নিজেরাই উদ্যোগতা ও প্রশিক্ষক তৈরি করতে পারবো।’
বর্তমানে দেশের বাহির থেকে অধিক খরচে প্রশিক্ষক আনতে হয়। দেশে আনা থেকে শুরু করে আবার বাহিরে যাওয়া পর্যন্ত সকল খরচ প্রতিষ্ঠানের ব্যয় করতে হয়। যদি এই খাতে আমাদের নিজস্ব লোক থাকতো তাহলে আমাদের এই খরচ বেঁচে যেত। সঙ্গে পণ্যের মূল্যও কমে যেত বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘এ শিল্পের জন্য টেস্টিং ল্যাবরেটরি ও পূর্ণাঙ্গ ইনস্টিটিউট প্রয়োজন তাই বিজিএপিএমইএ নেতারা জায়গার বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন মন্ত্রী মহোদ্বয়ের কাছে। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ল্যাব স্থাপনের জন্য ঢাকার আশেপাশে টঙ্গী, ধামরাইল, কোনাবাড়ী এলাকায় জায়গা বরাদ্দ দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী। তবে এখন পর্যন্ত তা সম্ভব হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘সরকার এ শিল্পখাতের উন্নয়নের প্রতি অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এ শিল্পের সুষম বিকাশের লক্ষ্যে পৃথক শিল্পনগরী গড়ে তোলার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় কাজ করছে।’ পূর্ণাঙ্গ ইনস্টিটিউট ও টেস্টিং ল্যাবরেটরি স্থাপনে জায়গা বরাদ্দ দেয়ার কার্যকর উদ্যোগ নিতে বিসিক চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
আব্দুল কাদের খান বলেন, ‘এই সেক্টরে ১৫শ’ সদস্য কাজ করছে। ৩৫টি পণ্য উৎপাদন করা হয়। সেলাই থেকে শুরু করে জাহাজে যাওয়া পর্যন্ত সকল কাজ করে থাকে বিজিএপিএমইএ। বিজিএপিএমইএ মোটামুটি অবস্থানে রয়েছি, অর্থের সাপোর্ট পেলে এই সেক্টর আরো ভালো করতে পারবে।’
এই গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ ও প্যাকেজিং শিল্প খাত ১৯৯০ সাল থেকে শুরু হয়েছে। ওই সময় ১৯ জন নিয়ে এই কমিটি গঠন করা হয়।
বিজিএপিএমইএ সেক্টরে কি পরিমান রফতানি হচ্ছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে আমরা ১৫-২০ শতাংশ পন্য রফতানি করে থাকি। যা দশমিক ৯০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। তবে করহার বৃদ্ধির প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে ক্ষতির সম্মুখীন হবেন পোশাক খাতের মোড়ক ও অন্যান্য অনুষঙ্গ প্রস্তুত ও রফতানিকারকরা।’
প্রস্তাবিত বাজেটে রফতানিমুখী গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ ও প্যাকেজিং শিল্পের ওপর উৎসে কর দশমিক ছয় থেকে বাড়িয়ে এক দশমিক পাঁচ শতাংশ করা হয়েছে। ফলে রফতানিমুখী শিল্পের স্বাভাবিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ার পাশাপাশি সক্ষমতাও কমে যাবে বলে মনে করেন তিনি।
প্রস্তাবিত বাজেটে অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে উৎসে কর দশমিক ৬ থেকে কমিয়ে দশমিক ৩ শতাংশ করার অনুরোধ করা হয়। যদিও তা হ্রাস না করে ১৫০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এ কারণে উৎসে কর আগের মতো দশমিক ৬ শতাংশ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘বাজেট প্রস্তাবে শুধু তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য করপোরেট কর ৩৫ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানে এ সুবিধা দেয়া হয়নি।’
সম্পাদনা: সজিব ঘোষ