
ঢাকা: বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণাধীন পায়রা সমুদ্র বন্দর শনিবার থেকে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেছে। এটি দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর। শনিবার বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বন্দরের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। পদ্মা সেতু নির্মাণের পর এই সমুদ্র বন্দরটি দেশের দক্ষিনাঞ্চলের অর্থনীতির চিত্র বদলে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
পায়রা বন্দর উদ্বোধনকে ঘিরে কলাপাড়া পৌরশহরসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে শোভা পাচ্ছে রঙ-বেরঙের ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার।
গত ১ আগস্ট বিকেলে মাদার ভ্যাসেল এমভি ফরচুন বার্ড পদ্মা সেতুর জন্য চীন থেকে ৫৩ হাজার টন পাথর নিয়ে পায়রা সমুদ্র বন্দরের বহির্নোঙরে আসে। এর মধ্যে দিয়ে এই বন্দর থেকে পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু হলো। বর্তমান সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যে ১০টি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে তার একটি পায়রা সমুদ্র বন্দর। এর মধ্যে রয়েছে পদ্মা সেতুও।
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সমুদ্রবন্দর কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করতে ২০১৩ সালের ১৮ নভেম্বর পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নে রামনাবাদ চ্যানেলের পশ্চিম তীরে ১৬ একর জমির উপর দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রার নির্মাণের কাজ শুরু হয়। বিদ্যমান দুটি বন্দরের পাশাপাশি তৃতীয় একটি বন্দর নির্মাণের মাধ্যমে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলতে নেয়া হয়েছে দীর্ঘমেয়াদি ও চতুর্মুখী পরিকল্পনা।
১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের মহা পরিকল্পনা নিয়ে ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর সংসদে পাস হয় পায়রা বন্দর অধ্যাদেশ-২০১৩। একই বছর ১৯ নভেম্বর বন্দরের ভিত্তি ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক হাজার ১২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের মধ্যে এই সমুদ্র বন্দর নির্মাণের পুরো কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। তবে জাহাজ ভেড়ার অবকাঠামো নির্মিত হয়ে যাওয়ায় আগেই ভিড়তে শুরু করেছে জাহাজ।
জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে মাদার ভেসেল থেকে লাইটার জাহাজে পণ্য খালাস করে নৌপথে পরিবহন করা হবে। পণ্য খালাস ও পরিবহনের জন্য ইতোমধ্যে বন্দরে এসে পৌঁছেছে ১৫টি লাইটার জাহাজ। বন্দর এলাকায় জেটি ও অত্যাধুনিক কনটেইনার ক্যারিয়ার, পানি শোধনাগার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শুল্ক স্টেশন, নিরাপত্তা ভবনসহ প্রয়োজনীয় ভবন নির্মাণ হচ্ছে। নিয়োগ দেওয়া হয়েছে শিপিং এজেন্ট, সিঅ্যান্ডএফ, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডও।
পায়রা বন্দরের এক কর্মকর্তা জানান, বড় বড় জাহাজ যেন রামনাবাদ চ্যানেলে নির্বিঘ্নে চলাচল এবং মূল বন্দরের জেটিতে নোঙ্গর করতে পারে সেজন্য চ্যানেলের গভীরতা পর্যবেক্ষণ করে খননের (ড্রেজিং) কাজ অচিরেই শুরু হবে।
গত ১ অগাস্ট বিকালে ৫২ হাজার ৩৭৯ মেট্রিক টন পাথর নিয়ে নোঙ্গর করে বাণিজ্যিক জাহাজ এমভি ফরচুন বার্ড। এই পাথর ব্যবহার করা হবে পদ্মা সেতুর কাজে। গত ১ অগাস্ট পণ্য খালাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে তা স্থগিত করা হয়।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/ওয়াইএ