
আমার এইরূপ মনে হয়। মনে হয়- জীবন এমন আজীব! অন্যের জীবন কাঁধে করে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এই জীবন কিছুতেই আমার না। সিন্দাবাদের সেই বুড়ো জীবনের ভার নিয়ে বুঝি আমার কাঁধেই চড়ে বসেছে। ফলত অস্বস্তি হয়। মনে হয়- আহা! কী ভারি জীবন বয়ে বেড়াচ্ছে পলকা দুটি পা আমার।
ইহারা তালগাছ। ইহারা এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকে
“সারাটা দিন খুব মন্দ গেলো। প্রায় দিনই মন্দ যায়। তবে এতোটা না। প্রিয়তম ফুল হারালো সুঘ্রাণ। একটা মিথ্যা লকলকিয়ে হলো উজ্জ্বল। আর তা কেবল অস্বস্তি ছড়ালো। যে পাখি সত্য জীবন চেয়েছিলো, সে আটকে থাকলো মিথ্যার ডানায়। কুৎসিত পাখি যদি ভালোবেসে ফেলে অনিন্দ্য সুন্দরকে! হাত বাড়ালেই বহুদূর আকাশের চাঁদ। গালি ছুড়লো ‘ব্লাডি সুয়াইন’। ধরা যাক, কেউ তাকে ভালোবাসলো না। কিন্তু সে ভালোবেসে গেলো গভীর গভীরে। চারদিকে ছড়িয়ে পড়া আলোর নীচে চুপচাপ অন্ধপাখি। তার মৃত্যু আসে না। পৃথিবী শীতের দিকে।”
এইটা উরুসেভস্কি গার্বেস্তা’র লেখা। গতবছর এই দিনে সে এইসব লিখেছিলো। ‘পৃথিবী শীতের দিকে’- এই বাক্যটার দিকে তাকিয়ে থাকলাম দীর্ঘ সময়। উরুসেভস্কি খুব সম্ভব গতকাল মারা গেছে।
এইটা বাতি, বৈদ্যুতিক বাতি
আজ অনেকটা পথ আমি হেঁটেছি। হেঁটে হেঁটে যখন পৌঁছলাম- তখন অনেকখানি ভেঙ্গে ফেলেছে। একজন ক্যামেরা নিয়ে অপেক্ষায় আছে আর একটু ভাঙ্গার। আমিও তার সাথে দাঁড়িয়ে থাকলাম।
যত উপরেই উঠুন আর নীচেই নামুন, এইখানে নিজের সাথে নিজের দেখা হবে একবার
আমার ক্যামেরাটা বুড়ো হয়ে গেছে। খুব যাচ্ছে তাই ছবি তোলে। বেশির ভাগই ঝাপসা। মডেল ফটোগ্রাফি করার মতো আমার ক্যামেরা ও লেন্স নেই হেতু আমি এইসব ছবি-টবি তুলি।
আয়নায় জমা মুখ
‘এই জীবন নিয়া আপনি কী করবেন?’- এইরূপ জিজ্ঞেস করি নিজেকেই নিজে আমি। জীবন নিয়ে বিব্রত হয়ে বসে থাকি। আসলেই তো! এই জীবন নিয়া মানুষ কী করে আসলে?
বিরাগ
মেডুসাকে চুম্বন করে তার চোখের দিকে তাকিয়ে অন্ধ হয়ে যেতে ইচ্ছে করে। এই কথা অবশ্য বাসায় জানে না।
মেডুসা
“ভাতশালিকের দেহের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে রয়েছে বাদামি রঙ। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথা ও ঘাড় কালচে। বুকের উপরের অংশ ও লেজ-উপরি ঢাকনিও কালো। দেহের বাকি অংশ কালচে বাদামি। কোন ঝুঁটি নেই। এর ডানার সাদা পট্টি ওড়ার সময় স্পষ্ট হয়। একই ভাবে স্পষ্ট হয় লেজের প্রান্তভাগ। অবসারণী-ঢাকনি সাদা। চোখের নিচে ও পেছনের পালকহীন চামড়া হলুদ। চোখ বাদামি বা লালচে বাদামি। ঠোঁট হলুদ। নিচের ঠোঁটের গোড়া সামান্য বাদামি-সবুজ। পা, পায়ের পাতা ও নখর হলুদ। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির চেহারা একই রকম, কেবল আকারে সামান্য ভিন্নতা দেখা যায়।”- উইকিপিডিয়া
ইহারা শালিক পাখি, ভাতশালিক কিনা জানি না
ছবির সাথে লেখার কোন মিল নেই। মিল খোঁজাও ঠিক হবে না। যেমন নীচের ছবিটা রাজহাঁসের। আর আমি ভাবছি- রাজহাঁস চিরকাল সুখি। কিন্তু রাজহাঁসের পা ভেঙ্গে গেলে সে সুখি থাকে কিনা জানি না।
রাজহাঁস চিরকাল সুখি
এই শহরে আমার দমবন্ধ লাগে। আমার মনে হয়- একটা জীবন নিয়ে টুপ করে আটকে আছি বোতলের ভেতর। দূরে কোথাও চলে যেতে মন চায় খুব। কিন্তু চলে যাওয়ার মতো স্বাধীনতা আমার নাই। আমার দাসের জীবন।