
ঢাকা: জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে সাঁড়াশি অভিযানের দ্বিতীয় দিনে শনিবার দুপুর পর্যন্ত সারাদেশে অন্তত ৫০০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে দুই দিনে ১৬ শতাধিক সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হলো।
জেলা প্রতিনিধি ও স্থানীয় পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত খুলনায় ৯২ জনকে, ঝিনাইদহে জামায়াত শিবির নেতাসহ ৪৮ জন, সাতক্ষীরায় ৩৫, নড়াইলে ৫৭, কুষ্টিয়ায় ৬৫, রাজশাহীতে ‘জেএমবি’ সদস্যসহ ১৩৭, পাবনায় ২৭ ও গাইবান্ধায় ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানের প্রথম দিনে শুক্রবার বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীসহ সারাদেশে সহস্রাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে রাজধানী থেকেই গ্রেফতার করা হয় ১৭৭ জনকে।
বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার দিনব্যাপী চলা ওই বিশেষ অভিযানে খুলনা থেকে ১০৩ জনকে, চট্টগ্রামে ১৩৫, রাজশাহীতে ৩১, সিলেটে ২২২, বরিশালে ২০, কুষ্টিয়ায় ৬৭, টাঙ্গাইলে ৬৮, সাতক্ষীরায় ৩৫, নাটোরে ২৭, পঞ্চগড়ে ২৬, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৮, দিনাজপুরে ১০০, মু্ন্সিগঞ্জে ১০ ও বান্দরবান থেকে ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মাসুদুর রহমান নিউজনেক্সটবিডি ডটকমকে জানান, শুক্রবার সাঁড়াশি অভিযানে রাজধানী ঢাকায় ১৭৭ জন গ্রেফতার হয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতদের অধিকাংশই বিএনপি জামায়াতের নেতাকর্মী যাদের বিরুদ্ধে আগেই নাশকতার মামলা ছিল। এছাড়াও গ্রেফতার হয়েছেন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী এবং বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিরা।
এছাড়া বগুড়া ও ময়মনসিংহে দুইজন জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। শুক্রবার রাতে ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার রাধাকানাই এলাকা থেকে টুয়েট (৩৫) নামে জেএমবির এক সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ফুলবাড়ীয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিফাত খান রাজিব নিউজনেক্সটবিডি ডটকমকে জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে ওই এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ফুলবাড়ীয়া ও কোতোয়ালি থানায় একটি করে মামলা রয়েছে।
অন্যদিকে বগুড়ার শেরপুরের বাগানবাড়ী এলাকার একটি ছাত্রাবাসে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে জিহাদী বইসহ জেএমবি সদস্য সাগর আহম্মেদ রনিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলা করেছে পিবিআই। পিবিআই বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকতারুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সম্প্রতি হঠাৎ করেই দেশে গুপ্তহত্যা বেড়ে যাওয়ায় পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজি) একেএম শহিদুল হক বৃহস্পতিবার এই সাঁড়াশি অভিযানের ঘোষণা দেন। ঢাকায় পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে এই যৌথ অভিযানের বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।
আইজিপি শহিদুল হক বলেন, দেশে সম্প্রতি যেসব সহিংসতা ঘটছে তার সঙ্গে `হোমগ্রোন` বা দেশীয় জঙ্গিরা জড়িত রয়েছে বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে। তাই এদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যাপকভাবে দেশব্যাপী একটি অভিযান শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
রমজান মাসের কারণে আপাতত এই অভিযানের মেয়াদ হবে এক সপ্তাহ। এক সপ্তাহ পর মেয়াদ বাড়ানো হবে কি না তা বিবেচনা করা হবে।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/পিএসএস/এসআই