
কুড়িগ্রাম: বানভাসি মানুষের কান্না যেন প্রকৃতির বিধান হয়ে দাঁড়িয়েছে এখানে। প্রকৃতির নিয়মেই যেন বছরের পর বছর পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে এখানকার গ্রাম আর ভেসে ওঠে নতুন চর। এই নিয়তিকে মেনে নিয়েই এখানে প্রতি বার চলে বন্যার সঙ্গে লড়াই।
বলছি কুড়িগ্রাম জেলার সড়কের সীমানা শেষ করে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় এক ঘণ্টার পথ পেরিয়ে দশ ঘড়িয়া চরের কথা। যেখানে বন্যার এতদিন পরেও পৌঁছায়নি কোনো ধরনের ত্রাণ।
শুক্রবার নিউজনেক্সটবিডি ডটকম’র বিশেষ প্রতিনিধি দল এলাকাগুলো সরজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন। জীবন আহাম্মেদ’কে সঙ্গে নিয়ে সজিব ঘোষ’র প্রতিবেদন।
কিছু দিন আগেও ছিলো না এই চর, তবে কখনই ছিলো না-তা কিন্তু নয়। এই চরের পূর্ব নাম ধলাগাছা। নূর ফকিরের চর হিসেবেও রয়েছে পরিচিতি। কোনো এক সময় মুখ লুকাতে বাধ্য হয় ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদীতে। জেগে ওঠে আবার।
এই চরের বসিন্দা মো. জেসমত আলী (৬৫) জানান, এভাবেই বন্যা আসে বন্যা যায়, আমাদের জীবনের কোনো পরিবর্তন আসে না। কেউ কোনো খোঁজ খবরও নেয় না। দুই দিন আগেও অর্ধেকের বেশি ঘর ডুবেছিলো বন্যার পানিতে। আমাদেরও কিছু করার ছিলো না, আর কেউ আসেওনি।
দশ ঘড়াতেই বাস করছেন গৃহিণী হালিমা আক্তার। কথা বলতেও যেন কষ্ট হচ্ছিলো তার। আধভাঙ্গা কন্ঠে বললেন, ‘এটা জীবন, এভাবেই চলে জীবন, শুঁকায় আবার ভিজে। তবুও পরে থাকতে হয় এখানে, পানি শুঁকানোর আশায়।’
এই বন্যার পানি শুঁকিয়ে গেলেই এখানে আবার নতুন করে শুরু হবে চাষাবাদ। সেইসঙ্গে নতুন করে দেখবে সবাই বেঁচে থাকার স্বপ্ন। আবার হয়তো কোনো দিন ডুববে এই চর। নতুন নামে জেগে উঠবে অন্য কোথাও। আর এই নদীর স্রোতের সঙ্গেই চলছে জীবনের উত্থানপতন।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/এসজি/জাই