Friday, June 2nd, 2023
নাটকীয় ম্যাচে খুলনার জয়
November 9th, 2016 at 6:29 pm
নাটকীয় ম্যাচে খুলনার জয়

ঢাকা: বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বিতীয় দিনেই চরম নাটকীয় ম্যাচ উপহার দিয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের খুলনা টাইটান্স। ১৩৩ রান করেও ৩ রানের নাটকীয় জয় পেয়েছে তারা। প্রতিপক্ষ ছিল নবাগত রাজশাহী কিংস।

জয়ের দ্বারপ্রান্তে ছিল ড্যারেন স্যামির রাজশাহী। ৬ উইকেটে ১২০ রান করেও ফেলেছিল তারা। ১৩ বলে তখন প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। টি-টোয়েন্টিতে এ রানটা একেবারেই মামুলি। কিন্তু সেটাও করতে পারেননি রাজশাহীর ব্যাটসম্যানরা। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৭ রান।

কিন্তু খুলনার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ৩ রান সংগ্রহ করতেই তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। লো-স্কোরিংয়ের এ ম্যাচটি যে এমন টানটান উত্তেজনাপূর্ণ হবে, সেটা হয়তো কেউ কল্পনাও করতে পারেননি।

এর আগে, দুপুরে টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন খুলনা টাইটান্সের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু অধিনায়কের আস্থার মূল্য দিতে ব্যর্থ হয়েছেন ওপেনার নিকোলাস পুরান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এ ব্যাটসম্যান ১৪ রানেই ফিরে গেছেন সাজঘরে।

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সদ্য সমাপ্ত টেস্ট সিরিজে ১৯ উইকেট পাওয়া মেহেদী হাসান মিরাজের শিকারে পরিনত হয়েছেন তিনি। ইনিংসের তৃতীয় আর নিজের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই সরাসরি লেগস্ট্যাম্প উড়িয়ে ফেলেন মিরাজ। দ্বিতীয় উইকেট জুঁটিতে কিছুটা ধীরস্থির হয়ে খেলছিলেন আরেক ওপেনার আব্দুর মাজিদ ও ওয়েসেলস। এ জুঁটি খুব সাবধানে এগিয়ে নিচ্ছিলেন স্কোর বোর্ডটাকে। পাওয়ার প্লে’তে উইকেট হারানোর পর নিজেদের কিছুটা ঘুঁচিয়ে নিয়ে সবেই টি-টোয়েন্টি মেজাজে ব্যাটিং শুরু করেছিলেন। কিন্তু তাদের খুব বেশি দূর এগুতে দেননি পেসার আবুল হোসেন রাজু। আঘাত হানেন খুলনা শিবিরে। তার শিকার ৩২ রান করা ওয়েসেলস। ২২ বলে চারটি বাউন্ডারি ও এক ছক্কা দিয়ে নিজের ইনিংসের ফুলঝুড়ি সাজিয়েছিলেন তিনি। ৪৮ রান করা এ জুঁটির ভাঙ্গনের পর আবারো শুরু হয় উইকেট পতন। আর সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি খুলনার ব্যাটসম্যানরা।

মাত্র ৭ রানের মধ্যে আরো দুই উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় পড়ে যায় খুলনা টাইটান্স। আব্দুল মজিদকে ফেরান প্যাটেল আর ৩ রান করে রান আউটের শিকার হন শুভাগত হোম। এরপর পঞ্চম উইকেট জুঁটিতে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ দলকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন অলোক কাপালিকে সাথে নিয়ে।

এ জুঁটি ৩৯ রান জমা করেন স্কোর বোর্ডে। এরপর আবারো ধ্বস নামে খুলনার ইনিংসে। মাত্র ২১ বল খেলে ৩২ রান করা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহকে আবুল হোসেন রাজু ফরহাদ রেজার তালুবন্দি করালে বড় সংগ্রহের স্বপ্নটা শেষ হয়ে যায় টাইটান্সের। দলীয় রান তখন ১১১। সেখান থেকে নিয়মিত বিরতীতে উইকেট হারিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৩৩ রান সংগ্রহ করে খুলনা টাইটান্স।

রাজশাহীর হয়ে আবুল হোসেন রাজু একাই নেন ৫ উইকেট। আর একটি করে উইকেট পেয়েছেন মিরাজ ও প্যাটেল।

জয়ের জন্য মাঠে নেমে মাত্র ২৪ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় ড্যারেন স্যামিবাহিনী। ওপেনার নুরুল হাসান (৪), সাব্বির রহমান (৪) ও ওমর আকমল (০) রানে বিদায় নেন। খুলনার পাকিস্তানি পেসার জুনাইদ খান এই তিনজনকেই সাজঘরে ফেরত পাঠান। স্টেডিয়ামে উপস্থিত রাজশাহীর সমর্থকদের মাঝে তখন নেমে আসে রাজ্যের নীরবতা। চতুর্থ উইকেট জুঁটিতে ওপেনার মুমিনুল হকের সাথে মাঠে নেমে দলকে কিছুটা চাঙ্গা করার চেষ্টা করেছিলেন সামিত প্যাটেল। কিন্তু এ জুঁটিকেও খুব বেশি দূর এগুতে দেননি মোহাম্মদ আজগর। ১০ রান করা প্যাটেলকে ফিরিয়ে দিয়ে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন। কিন্তু খুলনার স্বপ্ন ফিঁকে করে দেন মুমিনুল ও অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি।

তাদের আক্রনাত্মক ব্যাটিংয়ে মরচে ধরা রানের চাকায় ফিরে আসে গতি। ১০.৩ ওভারে ৫৯ রান সংগ্রহ করতে গিয়ে চার উইকেট হারানো রাজশাহীর স্কোরটাকে খুব দ্রুতই উর্ধ্বমূখী করেন মুমিনুল-স্যামি। ওপেনার মুমিনুলের ব্যাট কিছুটা সাবধানী ছিল, আর বিধ্বংসী ছিল স্যামির ব্যাট। মাত্র ৪০ বল খেলে ৫২ করেন তারা দু’জন। ভয়ঙ্কর হয়ে উঠা এ জুঁটিতে ফাঁটল ধরান পেসার শফিউল ইসলাম। ২৩ বলে ৩১ রান করা স্যামিকে প্রথমে প্যাভিলিয়নের পথ ধরান তিনি। এরপর হাফসেঞ্চুরিয়ান মুমিনুল হককেও ফেরান তিনি। ৫৭ বলে অর্ধডজন বাউন্ডারি হাঁকিয়ে নামের পাশে জমা করেছেন ৬৪ রান। মুমিনুল যখন আউট হন, রাজশাহী তখন জয় থেকে মাত্র ১৩ রান দূরে। সেই রানটাকে সহজেই টপকে ফেলার কথা ছিল আবুল হাসান রাজু ও ফরহাদ রেজার। কিন্তু সেটাও করতে পারেননি এ জুঁটি। জুনায়েদ খান আবারো আঘাত হানেন রাজশাহী শিবিরে। এবার তার শিকার ফরহাদ রেজা। শেষ ওভারে জয়ের জন্য রাজশাহীর প্রয়োজন ছিল মাত্র ৭ রান।

বল হাতে আসেন খুলনার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ নিজেই। প্রথম দুই বলেই সিঙ্গেল করে রান দেন তিনি। তৃতীয় বলটি দেন ওয়াইড। বল আর রান তখন সমান হয়ে যায়। তৃতীয় বলটি পূনরায় করতে এসে আবুল হাসানকে আরিফুলের ক্যাচে পরিনত করে ম্যাচের নিয়ন্ত্রন নিয়ে নেন। পরের বলেই আবারো উইকেট উৎসবে মেতে উঠে খুলনা শিবির। মোহাম্মদ সামির উইকেট উঁপড়ে ফেলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। শেষ দুই বলে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৪ রান। ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন। পঞ্চম বলে রান নিতে পারেননি। আর শেষ বলেতো সামনে এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে আউটই হয়ে যান। নাটকীয় এ ম্যাচে খুলনা টাইটান্স জয় পায় ৩ রানের। জুনায়েদ খান চারটি আর মাহমুদউল্লাহ তুলে নেন তিন উইকেট।

প্রতিবেদক: কবির, সম্পাদনা: জাহিদ


সর্বশেষ

আরও খবর

নাটকীয় ম্যাচে ৩২০ রান তাড়া করে জিতলো বাংলাদেশ

নাটকীয় ম্যাচে ৩২০ রান তাড়া করে জিতলো বাংলাদেশ


ইফতার পার্টি বাদ দিয়ে ৬ হাজার পরিবারের পাশে বিসিবি

ইফতার পার্টি বাদ দিয়ে ৬ হাজার পরিবারের পাশে বিসিবি


বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ

বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ


ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় টাইগারদের

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয় টাইগারদের


পায়ের অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে নেইমারের

পায়ের অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে নেইমারের


পুলিশের কাণ্ড যুব গেমসের ১১ খেলোয়াড় গ্রেপ্তার

পুলিশের কাণ্ড যুব গেমসের ১১ খেলোয়াড় গ্রেপ্তার


মেট্রোরেল স্টেশনে বিপিএলের ট্রফি

মেট্রোরেল স্টেশনে বিপিএলের ট্রফি


যত ভাবে ব্যাটারকে ফিরে যেতে হয় সাজঘরে

যত ভাবে ব্যাটারকে ফিরে যেতে হয় সাজঘরে


বিপিএল- এর মাঝেই ওমরাহ করতে গেলেন সাকিব

বিপিএল- এর মাঝেই ওমরাহ করতে গেলেন সাকিব


৫০০ তম ম্যাচ: শোয়েব মালিককে ‘গার্ড অব অনার’ রংপুর রাইডার্সের

৫০০ তম ম্যাচ: শোয়েব মালিককে ‘গার্ড অব অনার’ রংপুর রাইডার্সের