
এ সম্পর্ক ভেঙ্গে যাবারও নয়,যার কোন নামই নেই তা ভাঙবে কি করে! তুমিই বল
প্রিয় বন্ধু,
কেমন আছো? দীর্ঘদিন চিঠি লিখি না!! মনে হয় যুগ পার হয়ে গেল। নিউ ইয়র্ক-বাংলাদেশ করতে করতে আমার অবস্থা উড়াল পাখির মত, নিজেকে কোথাও স্থির করতে পারছি না। তোমার সাথে কতবার দেখাও হয়েছে, কথাও হয়েছে কিন্তু চিঠিতে যে কথা বলতে পারি, সামনাসামনি তা গুছিয়ে বলা মুশকিল। সময় স্বল্পতা, মতের বৈপরীত্য সব মিলিয়ে চিঠির কোন বিকল্প নেই। হাডসন নদীর যত জল বয়ে যায় আমার ইস্যু গুলোও কতটা সামনে চলে যায়, যেন আমি ঠিক তাদের দেখতে পাই না। তাই ঠিক করেছি বর্তমান আর পুরানো বিষয় নিয়ে প্রতিদিন লিখে যাব।
আজ যেই বিষয় নিয়ে কথা বলব সেটা আগে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনাকে ভিত্তি করে। তিন বছর আগে আমাদের ডেলিভারি ওয়ার্কার মেম্বার রুবেল একটি ছেলেকে নিয়ে আসে মেম্বার বানাতে ও লিগ্যাল সাপোর্ট এর জন্য। নাম তার বরকত উল্লাহ। তার বড় ভাই ফয়েজউল্লাহও সাথে। আমি তাদের কথা শুনে যা বুঝলাম বরকত বর্ডার ক্রসার। কিছুদিন হয় এসেছে। তার ইমিগ্রেশন কেস পেন্ডিং আছে। সে পিজা ডেলিভারির কাজ করে। ম্যানহাটনের কোন এক দোকানের পিজা ডেলিভারি দিতে গিয়ে তুষারপাতের কোন একদিনে পা পিছলে আছাড় খেয়ে পরে যায় এক ইষ্ট এশিয়ান মেয়ের উপর। মেয়েটি পুলিশ কল করে। অভিযোগ সে তার শরীরে অনাহূত ভাবে ছুঁয়েছে। পুলিশ কেস নিয়ে বরকত কে ছেড়ে দেয় পরে এবং তার কেস ক্রিমিনাল কোর্টে পাঠিয়ে দেয়। জেন্ডার জাস্টিস বিষয়ে আমি খুব সোচ্চার হলেও বরকতের স্টোরি শুনে রাগ লাগলেও মনে মনে ভাবলাম একটা উঠতি বয়সের ছেলে যে কিনা বাংলাদেশের নোয়াখালীর প্রান্তিক গ্রাম থেকে সবে মাত্র এসেছে। সিনেমা দেখে হয়তো জেনে থাকবে একটা ছেলে মেয়ের উপর পরে গেলে প্রেম শুরু হয় ; – সে কি ভাবে জানবে আন-ওয়ান্টেড টাচ কি জিনিস ! আর যেহেতু কাগজপত্র নেই তাই যদি ক্রিমিনাল কোর্ট তাকে দোষী সাব্যস্ত করে তাহাকে তো সে ডেপোর্ট হয়ে যাবে।
তারপর থেকে তার কোর্টের তারিখে আমি রেগুলার তার সাথে যেতাম। ভাষাগত সহযোগিতা আর মানসিক সাহস যোগানোই ছিল মূলত আমার কাজ।বরকত কোর্টের আগের দিন আমাকে মেসেজ দিত, যদি কোনদিন আমার যেতে দেরী হতো, সে খুব ভয় পেয়ে যেত। কোনদিন আমি বরকতের আগে গিয়ে কোর্টের বারান্দায় বসে থাকতাম। এই দুই বছর কোর্ট প্রক্রিয়ায় আমি বাদীকে দেখিনি। কভিড মহামারীর শুরুর দিকে একটি তারিখে আমি আর বরকত গিয়ে কোর্টে বসে থাকি কিন্তু জজ সাহেবা আসেননি তাই লম্বা তারিখ পরে। গত বছরের শুরুর দিকে কোন প্রমাণ না পাওয়ায় বরকত কে সামাজিক কাজ কর্ম করার ঘণ্টা ঠিক করে দিয়ে কোর্ট থেকে রেহাই দেয়া হয় ।

করোনার শুরুর দিকে বরকতের কাজ ছিলনা। তার ডেলিভারি বাইকও চুরি হয়ে গেছিল। আমি অন্য সব ক্ষতিগ্রস্ত মেম্বরদের মত তাকেও আমাদের সংগঠনের মাধ্যমে কিছু টাকা ও খাবার পাঠিয়ে দেই। করোনার সময় ম্যানহাটনে দুইটা মিছিলে উপস্থিত থাকে ও কিছু মেম্বারশীপ মিটিং এ জুম এর মাধ্যমে যোগ দেয় । গত জুন মাসে সে আমার সাথে দেখা করতে চাইলে আমি কিছুটা নিরুৎসাহিত করে বলি আমি যখন আসব ম্যানহাটন তখন দেখা করব। কি যে কারণ ছিল মনে নেই, হয়ত ব্যস্ত ছিলাম বলে ওকে আসতে বারণ করেছি।
গত জুলাই মাসের ৭ তারিখে আমি বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা হই পারিবারিক কাজ ও পরিবারের সাথে ঈদ উদযাপনের জন্য । ৯ তারিখ যখন আমি বাংলাদেশে পৌঁছি সেদিন রাতেই রুবেল এর কল। আমি হ্যালো বলার সাথেই রুবেল কান্না জড়িত কণ্ঠে যা বলল তা হল “বরকত কে তো ওরা মেরে ফেলেছে” — বরকতকে মেরে ফেলেছে! রুবেল আমাকে কিছু ফেইসবুক পোষ্ট, ভিডিও ও ছবি পাঠিয়ে দিল তা থেকে বুঝলাম বরকত হিট-এন্ড-রান এক্সিডেন্ট-এ মারা গেছে। অফিসের সাথে দ্রুত যোগাযোগ করলাম আমাদের করনীয় কাজগুলির একটি তালিকা বানালাম,পরিবার কে সাপোর্ট করতে গোফান্ড চালু হল, ফয়েজের সাথে কথা বলে বুঝা গেল সে ভীষণ মানসিক চাপের মধ্যে আছে। কি ঠিক আর কি বেঠিক বুঝতে পারছে না। আমাদের সমাজে কিছু মানুষ আছে যারা সামাজিক মাধম্যে এখন সত্যের চেয়ে গুজব আর ট্রমাটাইজ খবর ছড়াতে পছন্দ করে। আর বরকতের মৃত্যুও সে রকম খবরে পরিণত করার চেষ্টা ছলছিল। যেমন বরকতকে কারা যেন বা কালরা মাইক্রোবাসে উঠিয়ে নিয়ে যায় পরে খুন করে রাস্তায় ছুঁড়ে মারে! এটা হেইট ক্রাইম আরও কত কি! এক ইমাম তো টিভিতে গিয়ে ক্রাইম কমাতে পুলিশের বাজেট বাড়ানোর দাবীও করল।
আসল ঘটনা ছিল পুলিশ এক লোকের পিছনে দ্রুত ধাওয়া করছিল ২০/২৫ মাইল স্পিডের সড়কে ৬০ মাইল বেগে গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময় বরকতকে হিট করে সেই পুলিশই গাড়ি থামিয়ে বরকতকে হাসপাতাল নিয়ে যায়। আর বরকত সম্ভবত ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। রাস্তার ট্রাফিক কন্ট্রোল ভিডিও ও জনগণের শুট করা মোবাইল ভিডিও থেকে আমাদের এমন ধারনা হয়। ভীষণ কষ্টকর কাউকে চোখের সামনে এইভাবে মরতে দেখা। তবুও অবস্থা বুঝতে ২/৩ বার দেখেছি আর ভেবেছি ফয়েজ তাদের আপনজনেরা কত না জানি কত কষ্ট পেয়েছে ঐ ভিডিও দেখে।ফয়েজ এর এই ভয়াবহ বিপদে আমাদের মেম্বার রুবেল, তার কাজিন আরিফ ও পরিচিত জনেরা খুব সাপোর্ট করছে। বিদেশের মাটিতে বিপদের সময় নিজ দেশের মানুষেরা আপনার চেয়ে আপন ভূমিকা পালন করে।
যা বলছিলাম, নিউ ইয়র্ক পুলিশ এই শহরে নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া কারো পিছনে ধাওয়া করতে পারে না। করলে সেটা বেআইনি। কারণ হিসাবে বলা হয়েছে ক্রউডেড শহরে পুলিশ তাড়া করলে দ্রুত ভাগতে গিয়ে তারা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে এক বা একাধিক জান-মালের ক্ষতি করতে পারে – যা বরকতের ক্ষেত্রে ঘটেছে। পুলিশ তখনি কাউকে তাড়া করতে পারে যখন কেউ ডাকাতি বা খুন করতে বা বড় ধরনের ক্রাইম করে পালাতে চেষ্টা করে। পুলিশের চুপ থাকার ধরন দেখে আমাদের ধারনা হয়েছে পুলিশ ও এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী।

বরকতের ডেড-বডি হসপিটাল থেকে নিয়ে জানাজা পড়িয়ে বাংলাদেশে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।আমাদের সকলের ভরসার মানুষ জাহিদ মিন্টু ভাই দায়িত্ব নেন ডেড-বডি বাংলাদেশে পাঠানোর। যে মসজিদে সে নামাজ পড়ত বা বেশীর ডেলিভারি শ্রমিকেরা নামাজ পড়তে যায় ম্যানহাটনের সেই মসজিদ এ বরকতের জানাজা হয়,আমি বাদে আমাদের অফিসের সব স্টাফ রা সেদিন সেখানে উপস্থিত থেকে সহানুভূতি জানিয়েছেন আর সহযোগিতার চেষ্টা করেছেন । প্রায় ১৫০জন ডেলিভারি শ্রমিক সেদিন আমাদের সংগঠনের সাথে যুক্ত হয়। এখন নাকি প্রায় ৭ হাজার বাংলাদেশি ডেলিভারি শ্রমিক এই শহরে কাজ করে,করোনা-কালীন বর্ধিত চাহিদার কারণেই হয়ত সবাই এই সেক্টরেই রুটি রুজি করার চেষ্টা করছে। এত বড় শ্রমিক সম্প্রদায় সংগঠিত নয় তাই বরকতের মৃত্যু তাদের মনোজগতে বড় রকমের ধাক্কা – যে তাদের কিছু হলে কে করবে, তাই হয়ত সকলে দল বেধে যোগ দিয়েছে।
বাংলাদেশে ডেড-বডি আসলে বিমানবন্দর থেকে রিসিভ করে পরিবারের হাতে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল আমার ওপর। জুলাই এর ১৪ তারিখে রাত ২ টায় বাংলাদেশে পৌঁছে । বরকতের এক ফুপাত ভাই লাশ নিতে আসে, সাথে আরও একজন। তিন বছর পূর্বে বন্ধু মাসুম রাব্বানি পরিচয় করে দিয়েছিল রবিউল ভাই এর সাথে, উনি নারক্টিক্স এ কাজ করেন, গত তিন বছর বাংলাদেশে যাওয়া আসার সময় বিমানবন্দরের সকল ঝামেলা ওনার উপর দিয়ে যায়। সেদিন রাতেও উনি ছুটে এসেছিলেন, ওনার সিনিয়র সহকর্মীকে সাথে নিয়ে আমাদের সাহায্য করতে। ওনাদের সহযোগিতার পরেও অনেক ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়েছে। আমি যেন শুধু বরকত নয় আমাদের অভিবাসী মৃত্যুর পরে যদি আমাদের ডেড-বডি বাংলাদেশে গেলে আমাদের আত্মীয়দের কি পরিমাণ কষ্টকর পদ্ধতির মধ্যে যেতে হবে সেটাই ভাবছিলাম। সব কাজ শেষ করি ডেড-বডি যখন গাড়িতে উঠচ্ছিলাম কফিনের উপর হাত রেখে আমার চোখে অশ্রুর ধারা কান্না করতে করতে শুধু বলছিলাম বাছারে তোর সাথে আমার তো রক্ত সম্পর্ক ছিল না তবু এ কিসের বন্ধন- যে শেষ যাত্রায় আমি ই তোকে নিজে হাতে গাড়িতে উঠিয়ে দিতেছি। ভাল থেকো বাচ্চা আমার যেখানেই থেকো ভাল থেকো, পুলিশকে ভয় ইম্মিগ্রেশনের ভয়, কাজ না থাকার ভয় তোমার জীবন এখন সব ভয় ভীতির ঊর্ধ্বে।
নিউ ইয়র্কে ফিরে ফয়েজের সাথে দেখা করে ত্রিশ হাজার ডলার উঠেছিল সেই চেক প্রদান করি। ডেলিভারি শ্রমিকদের কি করলে নিরাপদ রাখা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা করি। ইতিমধ্যে বরকতের শোকসভা করা হয়েছে যেখানে আমাদের সংগঠন ও ডেলিভারিস্তাস ইউনদোস মিলে ৩০০ ডেলিভারি শ্রমিকদের বিনা মূল্যে হেলমেট, পুলিশের সাথে বাইক রেজিস্ট্রেশন ও বাইক ঠিক করে দেয়। আমরা প্রায়ই একটি অভিযোগ শুনতে পাই ডেলিভারি শ্রমিকেরা হেলমেট পরে না, রাস্তায় চলতে চলতে ভিডিও কলে কথা বলে যা দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ। আবার ডেলিভারি শ্রমিকদের অভিযোগ কাস্টমার আর রেস্টুরেন্ট মালিকেরা কেউ তাদের সম্মান করে না, খারাপ ব্যবহার করে, বাইক চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি দুর্ঘটনা তাদের রোজকার সমস্যা। তাই আমরা চিন্তা করলাম অধিকার সম্মানের লড়াই যেমন জরুরি তেমনি নিরাপদ থাকাও জরুরি। আমরা এক দিকে যেমন নীতি পরিবর্তন করার লড়াই এ যোগ দিব, তেমন নিজেদের নিরাপদ রাখার জন্য সুরক্ষা সরঞ্জাম দেওয়ার প্রোগ্রাম করব সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার পরেই তারেক আজিজ নামে অন্য এক বাংলাদেশী ডেলিভারি শ্রমিক মেম্বার দুর্ঘটনার প্রাণ হারান। তার পরের মাসে সালাউদ্দিন বাবলু নামক এক বাংলাদেশী শ্রমিক ভাইকে তার বাইক ছিনতাই করতে এসে ছুরি মেরে মেরে ফেলে। উনাদের কথা অন্য চিঠিতে বলব।
যে লোক বরকতকে হিট করে পালিয়ে যায় গত মাসে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে, তার জামিনের শুনানিতে যা শুনলাম সে হত্যা চেষ্টা ও ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স কেস এর আসামি ছিল। পুলিশ অনেক দিন থেকেই তাকে খুঁজতেছিলো। সেদিন তাকে পেয়ে এইভাবে ধাওয়া করছিল।আমাদের অনুমান সঠিক ছিল পুরানো আসামিকে ধাওয়া করা বেআইনি ছিল। এখন প্রশ্ন হল এটর্নি জেনারেল অফিস বরকত কে হত্যার দায় থেকে পুলিশকে কেন মুক্তি দিয়েছে? আমাদের এখন ইনসাফ পাওয়ার লড়াই করতে হবে। এই শহরে টিকে থাকতে গেলে ডেলিভারি শ্রমিকদের সংগঠিত হওয়ার বিকল্প নেই, নিজের বাইক নিজেদের অধিকার, কাজের জায়গায় সম্মান, সর্বোপরি নিজের সুরক্ষার লড়াই তারা নিজেরা না লড়লে পারবে না। তাদের অন্য বর্ণের মানুষদের সাথে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। বরকতের, তারিকের, বাবলুর মৃত্যু শুধু এক একটি ঘটনা নয় , এক ধরনের সতর্ক সংকেত। আমাদের ডেলিভারি শ্রমিক ভাইদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কি রোজ এইভাবে মরবে নাকি অধিকার আর সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।
বন্ধু, মনও ভাল নেই। বর্তমান প্রসঙ্গে বলছি, ওমিক্রন এর আক্রমণে ঘরে ঘরে করোনা পজিটিভ, যাকে ই কল করি কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। মানুষ পজিটিভ নিয়ে বাইরে যায়, সামাজিক দূরত্ব মানে না। নিজের সিমটম নাই বলে অন্যকে ভাইরাস দিতে একটুও চিন্তা করে না। সিডিসি নতুন নিয়ম করেছে এয়ারলাইন ব্যবসায়ীদের চাপে যে আইসোলেশন সময় কাল হবে ৫ দিন, আমার মনে হয় এই সিদ্ধান্তের কারণেই এত বেশি পজিটিভ। হাসপাতালে ভর্তির রেকর্ড অতীত ইতিহাস ভঙ্গ করেছে। ডাক্তাররা বলছেন পোস্ট কভিড সিম্পটম এর কারণে যাদের কোন সিম্পটম ছিল না তারাও ভুগছে। আমরা কি ভয়াবহ সময় পার করছি তা উপলব্ধি করার ক্ষমতা হারিয়েছি বলেই হয়ত নিজেরাই নিজেদের ধ্বংস করে দেওয়ার কারণ হচ্ছি ।
অনেক পরে লিখতে গিয়ে কি লিখতে কি লিখলাম জানি না। নিজ গুনে ক্ষমা করে দিও। ভাল থাকুক দুনিয়ার মেহনতি মানুষেরা, ভাল থাক বন্ধু ভাল থাকুক আমার দেশ ও দেশের মানুষেরা
ইতি
তোমার বন্ধু, যাকে কোন নামেই ডাকোনা
