
পঞ্চগড়: হিমালয় কন্যা খ্যাত পঞ্চগড়ে এবার শীত এসেছে কিছুটা আগেই। সন্ধ্যা নামতে না নামতেই শুরু হওয়া ঘন কুয়াশা এখন চলছে দুপুর পর্যন্ত। কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমালয় থেকে ধেয়ে আসা হিমেল হাওয়ায় জেঁকে বসতে শুরু করেছে শীত। দিন দিন বাড়ছে শীতের প্রকোপ।
শীত মোকাবেলায় এ জেলার মানুষের চলছে নানা প্রস্তুতি। গরম কাপড় আর লেপ তোষকের দোকানগুলোতে দিনভর চলছে বেচাকেনা। কিন্তু শীত বস্ত্রের অভাবে জেলায় নিম্ন আয়ের মানুষেরা বেশ দুর্ভোগে পড়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) পঞ্চগড়ে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
গত দুই সপ্তাহ ধরে এই জেলায় শীতের প্রকোপ বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। সকাল ১০ টা থেকে ১১ টার আগে সূর্যের দেখা মিলছে না। এরপর সূর্যের দেখা মিললেও তাতে উত্তাপ থাকে না। আবার সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে দিগন্তজুড়ে কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায়। রাতভর টুপ টুপ করে চলে কুয়াশাপাত। মধ্যরাতে তাপমাত্রা কমে যায়। সকালে বিস্তীর্ণ এলাকা, মাঠ, ঘাট, ছেয়ে যায় ঘন কুয়াশায়। গাছের পাতা ও সবুজ ঘাসে শিশিরের ছোঁয়া লাগে।
বর্তমানে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। রাতের ঘন কুয়াশায় হেডলাইট জ্বালিয়েও মহাসড়কে গাড়ি চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন চালকরা।
এদিকে শীত মোকাবেলার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন এ অঞ্চলের মানুষ। শীতে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে বেচাকেনা শুরু হয়েছে বেশ জোরেসোরে। ক্রেতা সমাগমও বেড়েছে অনেক বেশি। দিন দিন ভিড় বাড়ছে ফুটপাতের পুরাতন কাপড়ের দোকানে। শীতের তীব্রতা দেখে মনে হচ্ছে এ মৌসুমেও শীতের প্রকোপ তীব্র হবে।
কিন্তু ইতিমধ্যেই উত্তর থেকে ধেয়ে আসা ঠান্ডা বাতাস আর শীতে জেলার স্বল্প আয়ের মানুষেরা শীতবস্ত্রের অভাবে বেশ দুর্ভোগে পড়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক অমল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, ‘এবার কয়েক দফায় ২১ হাজার ৪১০ টি শীতবস্ত্র পেয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে পেয়েছি ১৩ হাজার ৪০০ শীতবস্ত্র। ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন এলাকার দুস্থ ও দরিদ্র শীতার্তদের মাঝে ৯ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। বাকিগুলোও প্রয়োজন মোতাবেক বিতরণ করা হবে।’
সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান ব্যক্তি ও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে পঞ্চগড় জেলার শীতার্তদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান জেলা প্রশাসক।
প্রতিবেদক: মো. লুৎফর রহমান, সম্পাদনা: ফারহানা করিম