
প্রীতম সাহা সুদীপ, ঢাকা: পুলিশের মনোবল ভেঙে দিতেই এখন তাদের পরিবারকে টার্গেট করছে জঙ্গিরা। এমটাই মনে করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা। তাদের মতে জঙ্গিবাদ নির্মূলে বাংলাদেশ পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। যে কারণে জঙ্গীরা এখন কোনঠাসা হয়েই তাদের পরিবারের সদস্যদের উপর হামলা চালাচ্ছে।
রোববার বিকেলে নিউজনেক্সটবিডি ডটকম –এর সাথে আলাপকালে এ অভিমত জানিয়েছেন খোদ পুলিশ কর্মকর্তারা। চট্টগ্রামে জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিযানে সফলতা দেখিয়ে আলোচনায় আসা পুলিশ কর্মকর্তা (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে হত্যার ঘটনা নিয়ে কথা বলছিলেন তারা।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও জোনের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার নিউজনেক্সটবিডি ডটকমকে বলেন, ‘যেহেতু পুলিশ জঙ্গি নির্মূলে কাজ করে যাচ্ছে, তাই মনোবল ভেঙ্গে দেয়ার জন্যই তাদের পরিবারকে টার্গেট করা হচ্ছে। কিন্তু এতে আমরা মোটেও ভীত নই। রিস্ক নিয়ে কাজ করাই পুলিশের চাকরি।’
বিপ্লব বলেন, ‘আমি স্পষ্ট বলে দিতে চাই এ ধরণের ঘটনা ঘটিয়ে পুলিশের মনোবল ভাঙা যাবেনা। জঙ্গিবাদ নির্মূলে আমরা সফল, তাই কোনঠাসা হয়েই তারা এ ধরণের কার্যক্রম চালাচ্ছে। এতে সাধারন মানুষের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছুই নেই। আমরা তাদের পাশে আছি, থাকবো। কিন্তু তাদেরও আমাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে।’
পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মির্জা আব্দুল্লাহেল বাকী নিউজনেক্সটবিডি ডটকমকে বলেন, ঘটনাটি খুবই দু:খজনক। তবে যেহেতু এটি চট্টগ্রামের ঘটনা এবং তদন্তাধীন; তাই এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে আমি অপারগ।’ তিনি জানান ঘটনার তদন্তে চট্টগ্রাম পুলিশকে সাহায্য করছে সিআইডি।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের ডেপুটি কমিশনার মোক্তার হোসেন নিউজনেক্সটবিডি ডটকমকে বলেন, ‘জঙ্গি দমনে বাবুল আক্তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। আর এ জন্যই তার স্ত্রীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি। এটা খুবই দু:খজনক ঘটনা। পুলিশের মনোবল ভেঙে দেয়ায় উদ্দেশ্যে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।’
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের এডিসি (ট্রাফিক) মাসুদুল হাসান এই প্রতিবেতককে বলেন, ‘পুলিশ কর্মকর্তাদের পরিবারের ওপর হামলা জঙ্গিদের কর্মকাণ্ডে নতুন মাত্রা। আমরা ধারণাও করতে পারিনি এভাবে আমাদের পরিবারের উপর হামলা হবে।’
এর আগে সকালে হত্যাকাণ্ডের পর চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার ইকবাল বাহার গণমাধ্যমকে জানান, বাসা থেকে ৫০ গজ দূরে মিতুকে ছুরিকাঘাত ও গুলি করে দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে মিতুকে চিনতে পারে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, জঙ্গি দমনে বিশেষ ভূমিকা রাখায় রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন এসপি বাবুল আক্তার। চট্টগ্রামে এক ফকির ও তার খাদেম হত্যা এবং বোমায় ব্যবসায়ী নিহত হওয়ার দুটি ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে জেএমবির একটি আস্তানার সন্ধান পেয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক এবং জেএমবি নেতা জাবেদসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়। গত অক্টোবরে পুলিশের সঙ্গে এক অভিযানে থাকা অবস্থায় গ্রেনেড বিস্ফোরণে নিহত হন জাবেদ।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/পিএসএস/এসকে