
মনিরুল ইসলাম, ঢাকা: ‘কল্যাণপুরে জঙ্গী আস্তানায় অভিযানকালে সন্ত্রাসীদের গ্রেনেড নিক্ষেপে পুলিশের চার কর্মকর্তার মৃত্যু, আহত ৪২ কর্মকর্তা, তিন জঙ্গী গ্রেফতার হলেও বাকীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে!’
দুঃখিত বন্ধু। এ রকম একটা খবর যদি আপনি আশা করে থাকেন তাহলে আমরা আপনার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারিনি! প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় আপনি যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন, আমরা সত্যিই দুঃখিত!
নাম-ঠিকানা না জেনে জঙ্গি বলছেন কিভাবে? জঙ্গীরা এ রকম পাঞ্জাবি, কেডস পরে ঘুমাতে গিয়েছিল কেন? চারটি পিস্তল দিয়ে কিভাবে সারারাত মূর্হূমূর্হূ গুলি চালানো সম্ভব? কেন তাদের জীবিত ধরা গেল না? এ রকম অনেক যৌক্তিক প্রশ্ন কারো মনে আসতেই পারে।
আমি যদি বলি আপনি বুঝেও না বোঝার ভান করছেন, আপনি খণ্ডাবেন কি করে? গোটা সোস্যাল মিডিয়া জুড়ে আলোচনা হচ্ছে যে প্রতিবেশীরা বলছে, ওই বাসার লোকেরা সারারাতই কথিত জিহাদের স্বপক্ষে শ্লোগান দিয়েছে। তাদের রুমে কথিত আইএসের পতাকা পাওয়া গিয়েছে। প্রচুর সংখ্যক উগ্রবাদী বইপুস্তক পাওয়া গেছে। তারপরও এরা জঙ্গি কিনা তা বোঝার জন্য কি রিসার্চের প্রয়োজন আছে?
আনুমানিক রাত একটার কাছাকাছি পুলিশের প্রথম দলটি বাসাটিতে নক করে এবং প্রথম দফা সংঘর্ষের পরে প্রায় সারারাত বিল্ডিংটা কর্ডন করে রাখা হয়। চূড়ান্ত অভিযান শুরু হয় ভোর ৫.৫০ এর দিকে। এত দীর্ঘ সময় তারা ঘুমিয়ে ছিলো কিনা, এই পোষাক পরার সময় পেয়েছিলো কিনা তা বোঝার জন্য বুদ্ধিজীবী হওয়ার প্রয়োজন আছে কিনা দয়া করে ভেবে দেখবেন কী?
সারারাত মুহুর্মুহু গোলাগুলি হয়েছে এ রকম কোন তথ্য আমার জানা নাই। আমি যতটুকু জানি যখনই পুলিশ বাসাটিতে ঢুকতে চেষ্টা করেছে ততবারই গুলি চালানো হয়েছে। চূড়ান্ত অভিযান হয়েছে একঘন্টার কাছাকাছি। ওই সময়েই মূলতঃ চূড়ান্ত গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। আপনার বিশ্বাস এ তথ্য আপনার অজানা নয়। তাহলে কেন এ রকম প্রশ্ন তুলছেন? পুলিশের সাফল্য মানতে পারছেন না, তাইতো!
আপনি তো সবজান্তা অথচ আপনি এই ধরনের অপারেশন গুলোর ইতিহাস জানেন না। দেশে এবং দেশের বাইরে কোথায় এই ধরনের অপারেশনে কতজন জীবিত গ্রেফতার হয়েছে জানালে বাধিত হবো। আসলে, পুলিশের কেউ মারা যায় নি কিংবা কেউ গুরুতর আহত হয়নি – এতেই তো আপনার যতো আপত্তি তাই না, বন্ধু!
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/এসকে
লেখক: কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)
প্রধান ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার।