
ঢাকা: ঠিকমত কাজ করবে, শ্রমিক ও সরকারের পক্ষ থেকে এমন প্রতিশ্রুতি পেলেই আশুলিয়ার বন্ধ থাকা কারখানাগুলো খুলে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পোশাক শিল্প মালিক সমিতি বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান।
শনিবার বিজিএমইএ ভবনে ইউএনএফপিএ ‘চেঞ্জিং জেন্ডার নর্মস অব গার্মেন্টস এমপ্লয়েস’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান শেষে আলাপকালে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি ফারুক হাসান, প্রকল্প পরিচালক মহসিন উদ্দিন আহমেদ, গার্মেন্ট উদ্যোক্তা মহনিসন উদ্দিন আহমেদ, উপ-পরিচালক জগলুল হায়দারসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকরা পোশাক কারখানার নাশকতার সঙ্গে যুক্ত থাকে না। শ্রমিক নিয়ে যারা মায়া কান্না দেখায় তারাই পোশাক কারখানার অসন্তোষ সৃষ্টি করতে চায়। মালিকদের চেয়ে শ্রমিকদের কেউ বেশি আপনজন নেই। যারা শ্রমিকদের নিয়ে মায়া কান্না দেখায় তারা নিজেদের স্বার্থে মায়া কান্না দেখায়। কোমল মতি শ্রমিকদের ভুল বুঝিয়ে বিভ্রান্ত করে।
তিনি বলেন, শ্রমিকরা উৎপাদনের সাথে জড়িত তার ভাল-মন্দ আমরা বেশি বুঝি। শ্রমিকরা ভাল থাকলে উৎপাদন ভাল হবে, শ্রমিকদের উৎপাদনশীলতা বাড়বে। তারা দেশের ২৮ বিলিন রফতানির অংশিদার। গার্মেন্টস কারখানার ক্ষতি হয়-এমন চায় না শ্রমিকরা।
সিদ্দিকুর রহমান আরো বলেন, দেশে প্রধান রফতানি খাত হলো তৈরি পোশাক খাত। এ খাত দেশের প্রধান কর্মসংস্থানের খাত। দেশে প্রতি বছর ২০ লাখ শ্রমিক শ্রম বাজারে আসছে। গার্মেন্টস খাত তাদের বড় অংশের কর্মসংস্থান করছে। দেশের লেদার খাত ও ফার্মাসিউটিক্যাল খাতের যতেষ্ট কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকলেও তারা সেভাবে এগিয়ে আসছে না। যে খাতটি কর্মসংস্থান করছে সেটাকেও অশান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
জিডিপি অর্জনে শ্রমিকদের অবদানের কথা উল্লেখ করে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, পোশাক খাত থেকে যে জিডিপি অর্জিত হয়; তার পেছনে সব থেকে বেশি অবদান এ খাতের ৪০ লাখ শ্রমিকের। যারা এসব শ্রমিকদের বিভ্রান্তিমূলক কজে লেলিয়ে দিচ্ছেন- তারা কত বড় ভুল করছেন সে ব্যাপারে তাদের কোনো ধারণা নেই। শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনার অন্যের দ্বারা বিভ্রান্ত না হয়ে শৃঙ্খলার সঙ্গে কাজে ফিরে আসুন। আপনাদের জন্য কারখানা খুলে দেয়া হবে। তাতে দেশ, আপনার এবং আমরা অর্থাৎ সবারই উপকার হবে।
এ সময় ‘চেঞ্জিং জেন্ডার নর্মস অব গার্মেন্টস এমপ্লয়েস’ প্রকল্পের বিষয়ে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ইউনাইটেড ন্যাশনস পপুলেশন ফান্ডের (ইউএনএফপিএ) সহায়তায় ২০১৪ সালের অক্টোবরে প্রকল্পটি শুরু হয়। আশুলিয়া, সাভার ও গাজীপুরে ২৪টি, নারায়নগঞ্জে ৮টি এবং চট্টগ্রামে ৮টিসহ মোট ৪০টি পোশাক শিল্প কারখানায় এ প্রকল্পের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এর মাধ্যমে নারীর প্রতি আচরণ পরিবর্তন ও সব শ্রমিকের সমন্বয়ে বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সবাইকে সচেতন করা হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি আরো বলেন, প্রকল্পটি আগামী ৩১ ডিসেম্ব্র শেষ হবে। মূলত প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার মাধ্যমে একটি শুভ সূচনা হবে। এই প্রকল্প আমাদের যা দিয়েছে তা শুধু ৪০টি কারখানায় সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না; দেশের সব কারখানায় ছড়িয়ে দিতে হবে। তবেই ২০২১ সালে ৫০ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অজর্ন সম্ভব হবে।
প্রতিবেদক: রিজাউল করিম, সম্পাদনা: জাহিদ